কখনো বন্যা, কখনো খড়া, নিত্যদিনের সঙ্গী ভাঙ্গন, ফসলে পোকাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিষ্পেষিত মানুষ গুলো বছরের প্রতিটি দিন থাকে ঋণের জালে বন্দি। বছরের পর বছর সেই ঋণের জাল থেকে হয় না মুক্তি। দারিদ্র্য অভাব অনটন লেগে থাকা মানুষ গুলো বিক্রি করে শ্রম। শ্রম বিক্রি করেই পরিশোধ করে ঋণের কিস্তির টাকা। দিনমজুর, রিকশা চালিয়ে খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষরা এখন করোনা আতঙ্কে ঘরে আটকা। চলমান করোনার আতঙ্কেও উপর বড় আতঙ্ক এনজিওদের কিস্তির টাকা। বাড়ি বাড়ি কিস্তির জন্য হানা দেয়া এনজিও কর্মীর চাপে দিশাহারা এখন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ঋণের জালে আটকে থাকা হাজার হাজার অসহায় মানুষ।
জানা গেছে, সারাবিশ্বের কাছে আতঙ্ক এখন করোনা। প্রতিদিন মৃত্যেুর তালিকা ভারি হচ্ছে।
আক্রান্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ। বাংলাদেশ রয়েছে ঝুকিতে বাড়ছে করোনা রোগী। সেই আতঙ্কে রয়েছে চিলমারীবাসীও। করোনা থেকে রক্ষা পেতে ইতি মধ্যে সরকারী ঘোষণার পরপরই মাঠে থেমেছে প্রশাসন। বন্ধ করে দেখা হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীও দ্রব্যের দোকান বাদে বিভিন্ন পন্যের দোকানপাট। মানুষ শুন্য হয়ে পড়েছে বাজারসহ বিভিন্ন মোড়গুলো। বন্দ হয়ে যাচ্ছে যানবাহন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেনা মানুষজন। ফলে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও শ্রম বিক্রি করা মানুষজন পড়েছে বড় বিপাকে। কেউ কাজেও নিচ্ছে না এদের। রয়েছে করোনা আতঙ্ক সাথে মৃত্যু ভয় এর উপর প্রশাসন ও পুলিশের ভয়। বাধ্য হয়ে হাত পা গুটিয়ে মানবেতর দিন পার করছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। যদিও কিছু জমানো টাকা হাতে থাকতো তার উপর নজর রয়েছে এনজিও কর্মীদের। করোনা আতঙ্ক মানুষগুলো ঘর মুখি হলেও সব সময় ভয়ে থাকছে কিস্তি আদায়কারী এনজিও কর্মীদের। উপজেলার কয়েকজন বলেন, কি হইবে আর আপনাদের বলি ভাইরাস আইছে করোনা থাকপের কইছে। ঘরে কিন্তু কিস্তির দিতে তো বন্দ করেন নাই। কাম নাই কাজ নাই বাড়ি থাকি বারও হওয়া যাবার নয় তাহলে কিস্তির দেমো কেমন করি। তারা আরো জানান ঘরে থাকলে করোনা ধরবের নয় সবাই কয়, কিন্তু কিস্তি আদায়কারীরা তো ছাড়ে না গো স্যার তাদের কাছে কিস্তি নিতে এসেছিল গ্রামীন ব্যাংক। ঠগের হাট এলাকার আঃ রহিম বলেন, টিএমএসএস এর কর্মীরা তাদের এলাকায় এসেছিল। শুধু রমনা, ঠগেরহাট, মজাইডাঙ্গা নয় পুরো উপজেলা চিত্র একই। হাত পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকা শ্রমজীবি মানুষরা এখন যেন বড় আতঙ্ক কিস্তি নামক শব্দটি। তবে এনজিও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আদায়কারীরা বলছেন আমাদের উপর এরকম কোন নির্দেশ আসেনি। তবে আদায় বিশেষ ক্ষেত্রে করা হচ্ছেনা। তবে একটি সুত্রে জানা গেছে, এনজিও কর্মীরা এখন কৌশলে কিস্তি নিচ্ছে। কেউ মুখ খুললে তাকে পরবর্তিতে আর লোন দেওয়া হবে না বলেও রয়েছে গোপন নির্দেশ। এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, কোন এনজিও বা সংস্থা যদি কিস্তির আদায় করে এর সঠিক তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।