করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অঘোষিত লকডাউনের শুরুতেই বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ হতদরিদ্র মানুষ। পাটকল ও মাছ কোম্পানিসহ উৎপাদনমুখী কারাখানাগুলো বন্ধ থাকায় কর্মহীন শ্রমিক পরিবারে দেখা দিয়েছে হতাশা। রিক্সা-ভ্যান ইজিবাইকচালক, রাজমিস্ত্রি, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুরসহ অসংখ্য মানুষ সীমাহীন কষ্টে দিন পার করছেন। একইভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটের শহর ও গ্রামে-গঞ্জে কর্মহীন অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে অভুক্ত থাকছেন।
দরিদ্রদের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, এ ধরনের সঙ্কটে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি জরুরি প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
জানা যায়, খুলনা নগরীর ছোট-বড় সাত শতাধিক বস্তিতে বসবাস করেন নিম্নআয়ের প্রায় দুই লাখ মানুষ। এদের অধিকাংশই দিনমজুর ও রিকশা-ইজিবাইকচালক। দৈনিক আয় না থাকায় হতদরিদ্র এসব মানুষরা এক প্রকার না খেয়েই দিন পার করছেন। নগরীর শেখপাড়া এলাকার সবজি বিক্রেতা শাহিনুল ইসলাম বলেন, রাস্তা-ঘাটে লোকজন নেই।
বেচা-কেনা না হওয়ায় আয়-ইনকামও বন্ধ। ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়েই থাকতে হচ্ছে।
রূপসার রাজাপুর এলাকার মাছ কোম্পানির শ্রমিক রোজিনা আক্তার বলেন, ‘মাথার ওপর মা ও ভাই-বোনসহ ৫ জনের সংসার। কোম্পানি বন্ধ থাকায় ঘরে বাজার-সদায় নেই। ধার-কর্জ করে চলতে হচ্ছে।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত এসব মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান রূপসা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার। তিনি বলেন, যারা একেবারেই দিনমজুর, দিন আনে দিন খায় অবস্থা, খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলাভিত্তিক বরাদ্দ থেকে প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি আলু, পিয়াজ, লবণ, তেল ও সাবান একটি প্যাকেজ আকারে দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, খুলনা মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ছোট-বড় মিলিয়ে বস্তির সংখ্যা ৭২৬টি। তাতে বসবাস করছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ। এর মধ্যে লক্ষাধিক রয়েছেন রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক।