মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে থমকে গেছে বিশ্ব। হু হু করে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত কয়েক দিনে চক্রবৃদ্ধিহারে বেড়েছে এই সংখ্যা। বাংলাদেশেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে পাঁচ জন। দেশজুড়ে চলছে অঘোষিত লকডাউন । গত ২৬শে মার্চ শুরু হয়েছে, চলবে ৪ঠা এপ্রিল পযর্ন্ত। সরকারি ছুটি ঘোষণা করার পর গত ৪দিনেই মহাবিপাকে পড়েছে রাজধানী নিম্ম আয়ের মানুষ। এর আগে যখন হাতে অফুরন্ত কাজ ছিল তখনও কোনোমতে খেয়ে পড়ে থাকতেন তারা।
কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে তাদের কপালে। খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছেন তারা। আরও কয়েকদিন গেলে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবেন এই নিয়ে চিন্তার শেষ নেই শ্রমজীবীদের।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চেষ্টা করছে সরকার। ফলে সবাইকে বাসা বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গনপরিবহনসহ বিভিন্ন নির্মাণাধীন কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। এতে স্ত্রী ও সন্তানের খাবার সংগ্রহ করতে হিমশিম খাছেন এসব নিম্ম আয়ের মানুষ।
শেওড়া পাড়ায় কাঁচা বাজার করতে আসা সিরাজ মিয়া জানান, আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। স্ত্রী,৩ সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা মাকে নিয়ে অলিমিয়ার টেকে ভাড়া থাকি। দৈনিক যা আয় হতো, তা দিয়ে দিন চলে যেতো। এখন কাজ কর্ম সব বন্ধ আছে। স্ত্রীর জমানো টাকা দিয়ে বাজার করতে আসছি। সামনের দিন গুলোতে কিভাবে চলবো জানি না। কাজ না করতে পারলে সবাই না খেয়ে মারা যাবো।
ভ্যানচালক আজহার উদ্দিন জানায়, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে সব কাজকর্ম বন্ধ। জমানো টাকা দিয়ে আগেই বাজার করে রেখেছিলেন। যা আর দুই থেকে তিন দিন চলতে পারে। এরপর কি করে চলবো তা জানা নেই।
নাম প্রকাশ করা না শর্তে একটি নামী কোচিং সেন্টারের শিক্ষক বলেন, কয়েক মাসের বেতন আটকে আছে। এখন হাত খালি। বউ বাচ্চাদেরকে কি খাওয়ামু? দেশে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে কারো কাছ থেকে ধার পাওয়া যায় না। সবার একই অবস্থা। ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি করছে।