ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আনন্দবাগ নামে একটি গ্রাম স্বেচ্ছায় লকডাউন করা হয়েছে। গ্রামে প্রবেশের তিনটি রাস্তা, তিন রাস্তার মোড়েই বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। যারাই গ্রামে প্রবেশ করছেন তাদের পরিচয় এবং প্রয়োজন নিশ্চিত হয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে জীবানুনাশক দিয়ে গোটা শরীর স্প্রে করে দিচ্ছে প্রশাসন। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হতে পারছে না। তালিকা তৈরী করে সকলে বাড়িতে খাবার পৌছে দিচ্ছেন গ্রামবাসি। গত তিনদিন তারা এভাবে নিজেদের গ্রামটিকে সুরক্ষা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামবাসির দাবি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কার্যক্রম চলবে ।
সরেজমিনে আনন্দবাগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাইকপাড়া মোড়ের তল্লাশি চৌকিতে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষক রুহুল আমিন। কাউকে দেখা মাত্রই দুই যুবক ছুটে যাচ্ছেন। জীবানুনাশক দিয়ে সমস্ত শরীর স্প্রে করে দিচ্ছে তারা। তারা জানান, ২৫শে মার্চ তারা গ্রামের মসজিদে বসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে ২৬শে মার্চ থেকে আনন্দবাগ গ্রামটি স্থানীয় ভাবে লকডাউন করে দিয়েছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, আনন্দবাগ গ্রামে ১৪০ টি পরিবারে দুই হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। গ্রামে প্রবেশের তিনটি রাস্তা রয়েছে। সবগুলো রাস্তার মোড়ে তাদের ছেলেরা কাজ করছেন।
মোড়ে বাঁশ বেঁধে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেখানে পটাশ ও স্যাভলন মিশ্রিত পানি, সাবান আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে বসে আছেন যুবকরা। কেউ গ্রামে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে স্প্রে করানো হচ্ছে। গ্রামের বাসিন্দা মোবাশ্বের হোসেন জানান, এভাবে গ্রামটি লকডাউন করে দেওয়ায় নিত্য আয়ের মানুষগুলোর কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এই কথা চিন্তা করে তারা হতদরিদ্র ২০ জনের তালিকা করেছেন। এ অবস্থা যতদিন চলবে ততদিন গ্রামের মানুষ তাদের সহযোগিতা দিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুলতান আহমেদ বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন। যেহেতু সারা দেশে লকডাউন চলছে, সেখানে গ্রামবাসির এই উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। তবে সতর্ক থাকতে হবে কোনো ভাবেই যেন জরুরী প্রয়োজন বাঁধাগ্রস্থ না হয়।