× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনা: একটি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ভিতরটা (ভিডিও)

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) মার্চ ২৯, ২০২০, রবিবার, ৪:২৪ পূর্বাহ্ন

ইতালির একটি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার বা আইসিইউ। কাচে ঘেরা ওই ইউনিটে গোঙানির শব্দ। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। অক্সিজেন সরবরাহের শাঁ শাঁ শব্দ। মৃত্যুদূত যেন ঘুরছে আশেপাশে। ক্ষণে ক্ষণে মারা যাচ্ছে মানুষ। স্ট্রেচারে করে বের করে আনা হচ্ছে লাশ। তা দেখে দেখে আঁৎকে উঠছেন চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্টাফরা।
এমন অভিজ্ঞতা অতীতে হয়নি কখনো তাদের। এসব নিয়ে চ্যানেল ৪ নিউজ একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে ইতালির একটি হাসপাতালের আইসিইউয়ের ভিতরটা দেখানো হয়। ডাক্তার, নার্স, স্টাফরা সার্জিক্যাল মাস্ক পরা। জুতার কভার, ক্লাপ, গ্লাভস পরনে। তাদেরকে দেখতে উদ্ভট লাগে। রোবটের মতো পোশাকে তারা প্রবেশ করছেন আইসিইউতে। সেবা দিচ্ছেন রোগীর।
তাদের সামনে সারি সারি শোয়ানো রোগী। বেশির ভাগই উপুর করা। তার মাঝে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন একজন ডাক্তার অথবা নার্স। ইনটেনসিভ কেয়ার সমন্বয়ক কারলা মায়েস্ত্রিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলো যে, এখনও আমাদের এই হাসপাতাল থেকে কেউ একজন সুস্থ হননি। আমরা আসলে কিছু রোগীকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনতে চাই। মন থেকে চাই তারা সুস্থ হোন। আমরা ভাল কিছু করতে চাই। সেজন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ সময় দেখা যায় একজন স্বাস্থ্যকর্মী স্ট্রেচারে করে বের করে নিচ্ছেন একটি মৃতদেহ।
কারলা মায়েস্ত্রিনি বলেন, প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছেন। তা দেখে দেখে আমরা বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছি। মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। কারণ, আমাদেরকে যে কারণে এখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মনে হচ্ছে আমরা তা যথাযথভাবে পালন করতে পারছি না। আমাদের দায়িত্ব মানুষকে সেবা দেয়া তাদেরকে সুস্থ করে তোলা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা তাদেরকে শুধু দেখছি মরতে। তা দেখতে দেখতে ভিতর থেকে আমরাও মরে যাচ্ছি।
এ সময় আরো রোগী বহন করে নিতে দেখা যায় একটি এম্বুলেন্সকে। নার্স সিমোনা তোমাসোনি বলেন, আমাকে বিস্মিত করে এই বিষয়টি যে, এই জরুরি অবস্থার সময়ে আমাদের যেন কোনো শক্তি নেই। এটা সত্য যে, আমরা খুব জটিল রোগী পাচ্ছি। মাঝে মাঝে এমনও হয় যে, তারা তাদের জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছেন। এমন রোগী আসছে। তবু আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। বিষয়টি সবার জন্যই খুব কষ্টের। খুবই কষ্টের।
এক পর্যায়ে শোনা যায় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ভিতরে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ দেয়ার শোঁ শোঁ শব্দ। পালমোনারি বিষয়ক পরিচালক গিয়ানকারলো বসিও বলেন, আমার ডাক্তারির ৪০ বছর জীবনের অভিজ্ঞতায় এমন ভয়াবহতার মুখোমুখি হইনি কখনো। দুঃখজনক হলো মৃতের হার এখানে অনেক বেশি। এই ভাইরাস শুধু বৃদ্ধদেরই আক্রান্ত করছে না, একই সঙ্গে যুবকরাও ছাড় পাচ্ছেন না। দিনেরাতে মাত্র দু’এক ঘন্টার জন্য বাড়িতে যেতে পারছি আমরা। গিয়েই সোফার ওপর বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি।
কারলা মায়েস্ত্রিনি বলেন, আমরা যেটুকু ঘুমাই, তা ঘুম নয়। প্রতিটি ঘন্টায় আতঙ্ক, ভীতি নিয়ে জেগে যাই। আমার স্বামী ও মেয়ে আমার জন্য বাসায় অপেক্ষা করে। আমার সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করে তারা। কিন্তু আমি কথা পর্যন্ত বলতে পারি না। তারা জানতে চায়, আমি কি তাদের কথা শুনতে পাই কিনা। আসলে আমি তাদেরকে শুনি না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর