× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মানুষ মানুষের জন্য

অনলাইন

মারুফ কিবরিয়া
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ১, ২০২০, বুধবার, ৯:০৭ পূর্বাহ্ন

প্রাণঘাতি নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে করোনা। বাংলাদেশেও আক্রান্তের খবরে চলছে অঘোষিত লকডাউন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা তুলনায় কম। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী  করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এমনকি না হতে পেরে রোগী মৃত্যুর চিত্রটাও নেহাত কম নয়। এ নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটও তীব্র হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। যার যা সামর্য্  আছে তা নিয়ে দাঁড়াচ্ছেন মানুষের পাশে।

গত ২৮শে মার্চ দেশের খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো  ১৫ কোটি টাকার পিপিই, ওষুধ ও টেস্ট কিট দেয়ার ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা বিদেশ থেকে আমদানি করা উচ্চমানের টিওয়াইভিইকে প্রোটেকটিভ কভারওয়ালা মুখবন্ধনী, গ্লাভস, সুরক্ষিত চশমাসহ পিপিই দুই ধাপে বিতরণ করবে। প্রথম ধাপে দুই পরীক্ষাকেন্দ্র আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি এবং কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, কমলাপুর রেলওয়ে, নয়াবাজার মহানগর, মিরপুর বিএভিএস মেটারনিটি, কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা, আমিনবাজার ২০ শয্যা, জিঞ্জিরা ২০ শয্যা ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পিপিই দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৫০টির বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে পিপিই সরবরাহ করবে বেক্সিমকো।
এগিয়ে এসেছে দেশের আরেক করপোরেট প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপ। এরই মধ্যে তারা তেজগাঁওয়ে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। আকিজের নিজস্ব জমির উপর ৩০১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ হাসপাতাল নির্মাণের কথা শোনার পর স্থানীয়দের বাধায় শুরুতে কাজ থমকে গেলেও পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সহযোগিতায়  আবার শুরু হয়। আকিজের সঙ্গে এ মহৎ উদ্যোগে অংশীদার হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
আকিজ গ্রুপের হাসপাতাল নির্মাণের খবর যখন প্রশংসা কুড়াচ্ছিল ঠিক এমন সময় চীনের উহান থেকেও বড় করোনা হাসপাতাল নির্মাণ করার প্রস্তাব দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।  রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) চারটি হল ও একটি ট্রেড সেন্টারকে ৫ হাজার শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের লিখিত প্রস্তাবটি দেয়া হয়েছে। ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীও এগিয়ে এলেন করোনা ভাইরাস মোকাবিলায়। তার উদ্যোগে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৭শ পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) দিয়েছে মেট্রো নিটিং এন্ড ডাইং মিলস লিমিটেড। করোনায় অসহায় মানুষের কল্যাণে নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক টাকা আগেই দিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ২৭ ক্রিকেটার নিজের বেতনের  ৫০ শতাংশ নিয়ে একটি তহবিল গঠন করেছেন। সেসব টাকা ব্যয় করবেন অসহায় মানুষের জন্য। এর মধ্যে রয়েছেন, মাশরাফী, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহসহ সব তারকা ক্রিকেটার। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় অন্যদের মতো স্ব উদ্যোগে কাজ করছেন নোয়াখালীর-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীও। তিনি নিজ তহবিল থেকেই ৫০ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন  ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনও। শনিবার থেকে তিনি রাজধানীর গোপিবাগ এলাকায় গরীব দুস্থদের মাঝে খাবার ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরন করেন।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আরো এক মাস আগে থেকেই কাজ করে আসছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। লকডাউন পরিস্থিতিতে অনেকের  খাবারের ব্যবস্থা করছে সংগঠনটি। এ বিষয়ে বিদ্যানন্দের ঢাকা শাখার প্রধান সালমান খান ইয়াসিন জানান, আমরা প্রায় একমাস আগে করোনা নিয়ে কাজ শুরু করি। কভিড-১৯ যখন চীন থেকে ইউরোপের দিকে যাচ্ছিলো তখন আমরা ধারণা করেছিলাম যে, ভাইরাসটি হয়তো আমাদের দেশেও আসবে। তখনই আমরা এটা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করি। ওই সময় আমরা মাস্ক তৈরি শুরু করি। ওই সময় হঠাৎ মাস্কের সংকট বেড়ে যায়। তখন আমরা মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করি। আমরা কিছু হ্যান্ড স্যানিটাইজারও সংগ্রহ করেছিলাম যেগুলো এখন আমরা বিভিন্ন মসজিদ, হসপিটাল এবং চিকিৎসকদের মাঝে বিতরণ করেছি। এই ক্যাম্পেইনগুলো আমাদের প্রায় শেষ। আমরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজ করেছি। আমরা শুরুতে বাস স্ট্যান্ডগুলোতে জীবাণুনাশক ছিটিয়েছি। এখন হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন জীবাণুনাশক ছিটিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া হাসপাতালের আশপাশের রাস্তা এবং জায়গাগুলোতেও এই কাজ করছি। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় ৯ হাজার লিটার জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছি এখন। যেহেতু পুরো দেশ ছুটির মধ্যে আছে। কেউ বাইরে বের হচ্ছে না তাই আমরা প্রশাসন থেকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে এই কাজ করে যাচ্ছি।  এই মুহূর্তে আমরা যে কাজে ফোকাস করছি সেটি হল- যেহেতু মানুষের এখন কোনো কাজ নেই, যারা দিনমজুর তারা কিন্তু একটা সংকটের মধ্যে পড়তে পারে। এখন হয়তো তাদের অনেকের কাছেই কিছু টাকা পয়সা আছে তবে কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো তা শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে তৈরি হওয়া সংকটের সাপোর্ট দেয়ার জন্য আমরা প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে খাবার দেবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর