× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রধান সড়ক ফাঁকা লোকশুণ্য, গলিতে জনসমাগম

অনলাইন

পিয়াস সরকার
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ১, ২০২০, বুধবার, ৩:১৮ পূর্বাহ্ন

মিরপুর ৬০ ফিট এলাকা।চায়ের দোকানে আড্ডা চলছে। দোকানের ২টি শাটারের ১টি খোলা। ভেতরে বিভিন্ন বয়সের ৮জন বসে আছে। ৩ জনের মুখে মাস্ক। প্রায় সবার আলোচনার বিষয় করোনা ভাইরাস। দোকানদার বার বার বেশি সময় ধরে বসতে নিষেধ করছেন। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের।

এলাকায় সড়কের ধারের দোকানগুলো বন্ধ।
তবে গলির দোকানগুলো বেশিরভাগই খোলা। চলছে চায়ের দোকানের আড্ডাও। সেখানে সীমিত আকারে বেচা বিক্রি চলছে। আর বাসার দোকানগুলো লোকজনে ঠাসা।

চা দোকানদার মো. ইউনুস। ১২ বছরের ব্যবসা তার। জানান, নির্বাচনের সময়েও এত ভয় পান নাই দোকান খোলা রাখতে। কিন্তু এখন সেই ভয়টা প্রবল। এরপরও খোলা রাখার কারণ হিসেবে বলেন, বাজান দোকান না খুললে খামু কি? না খাইয়া মরনের থিকা ভয় নিয়া দোকান খোলোন ভালা। চায়ের দোকানে উঠতি বয়সের বেশ কিছু ছেলে। তাদের আড্ডার বিষয়বস্তুও করোনা।

মিরপুর বাঙলা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের অবস্থা ভয়ংকর। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী দেশে আসা প্রবাসীদের নিয়ে নানা প্রশ্ন তুললেন। তাদের কাছে এত ভয়ংকর পরিস্থিতেও বাইরে আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, বাড়িতে কত সময় থাকা যায়? বোর হয়ে গেছি।

সকালে দেখা যায়, বাজার করার জন্য গুচ্ছ বাজারগুলোতে লোকজনের ভীড়। বাজারের মানুষের অনেকেই ব্যবহার করছেন মাস্ক। সবজি বিক্রেতা আব্দুল সোবহান বলেন, আগের থেকে এখন ক্রেতা বেশি। তিনি প্রশ্নের জবাবে জানান, করোনা আসার শুরুর দিকে মানুষ আসতো দ্রুততার সাথে কিনে বাড়ি যেত। কিন্তু ধীরে ধীরে এখন যাচাই করে পণ্য কিনছেন অধিকাংশ ক্রেতা। ছোট্ট (বয়স ৪-৫) ছেলেকে নিয়ে বাজার করতে আসেন চাকুরিজীবী মামুন। ছেলের মুখে মাস্ক থাকলেও নেই তার নিজের মুখে। এই সবজির দোকানে মাত্র ৩টি সবজি (আলু, ফুলকপি ও টমেটো) প্রায় ২০ মিনিট ধরে কিনলেন। এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে নিয়ে বাজারে আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আল্লাহ ভরসা। আল্লাহ চাইলে এসব রোগ ধরবে না। আল্লাহ যদি চায় ঘরে শুয়ে থেকেও মারা যেতে পারি। এরপর ছেলের হাত ধরে গেলেন বাজারের ভেতর।

মিরপুর-২ এলাকায়ও একই চিত্র। চায়ের দোকানের আড্ডা জমজমাট। কলেজ পড়ুয়া ৫ থেকে ৬ জন ছেলের আড্ডা চলছে গলির ভেতর। একটি বন্ধ দোকানের সামনে বসে মাঝে মাঝে করছেন ইভটিজিংও। কথা বলতে চাইলে ভীষণ বিরক্ত হন তারা। মোকিত নামে একজন বলেন, ধুর বাড়িতে কতক্ষণ থাকা যায়। করোনা মরোনা এগুলা আমাগোরে ধরবো না।

মিরপুর-১ এ গিয়ে দেখা যায়, প্রায় জনশুন্য। তবে কাচাবাজার এলাকায় বেশ ভিড়। মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনের সিড়িতে আড্ডায় বসেছেন ৪ জন প্রবীণ। সকলের হাতে পোর্টেবল কাপে চা। গল্প করতে করতে চা পান করছেন তারা। বাদশা মিয়া বলেন, ছোট বেলায় কলেরা দেখছি। গ্রামের পর গ্রাম ফাঁকা হয়ে যাইত। এখন আসলো করোনা। কী যে হবে দেশে? বেশ চিন্তিত তিনি। সবুর মিয়া বলেন, কিছু হবে না ইনশাআল্লাহ। আমাদের দেশে ২ দিন তো নতুন রোগীই ছিল না। কাল মনে হয় নতুন রোগী পাওয়া গেছে। এই কথা বলার পরেই শুরু হলো বাকবিতন্ডা। আরেকজন বলেন, টেস্ট করলে না ধরা পড়বে? প্রতিদিন জ্বর সর্দি নিয়া মানুষ মারা যাচ্ছে। জবাবে তিনি বলেন, কেন আগে মারা যাইত না। এগুলা খবরে আসতো না। আর ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা দিতে ভয় পায় তাই হয়ত মারা যাচ্ছে। তিনি ফের বলেন, চিকিৎসা দিতেতো ভয় পাবেই নিজের জীবনের মায়া নাই। এভাবে তাদের চায়ের আড্ডা চলতেই থাকে। চা আর শেষ হয় না। এর মাঝে বেশ কয়েকজন চা নিলেন তাদের কথা শুনলেন, আড্ডায় যোগ দিয়ে চলেও গেলেন কিন্তু তাদের আড্ডা চলছিলোই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর