× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঢাকায় পুলিশের কঠোর তৎপরতা তবুও রাস্তায় নামছেন অনেকে

অনলাইন

রুদ্র মিজান
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ১, ২০২০, বুধবার, ৫:০৪ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি

শপিংমলগুলো বন্ধ। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অফিস বন্ধ। মুদি, সবজি, ওষুধ ও মোবাইলফোনের দোকানগুলো খোলা থাকলেও ক্রেতার ভিড় নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে চলছে এই বন্ধ। এই বন্ধের মধ্যেই করোনা সংক্রমনের আতঙ্ক উপেক্ষা করছে অনেকে। রাস্তায়, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে গল্প-গুজবে মেতে উঠেছেন। ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। ঢাকার বিভিন্ন সড়কে নেমেছে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা।
প্রাইভেট কার, মোটারসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন অনেকে। রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা, পলাশি মোড়, কাঁটাবন, হাতিরপুল, কাওরানবাজার, হাতরিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এই দৃশ্য।

সরকারি নির্দেশ মানানোর চেষ্টা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। মোড়ে মোড়ে রয়েছে পুলিশ। বিভিন্নস্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।

সরজমিন দেখা গেছে, মগবাজার সংলগ্ন এলাকায় হাতিরঝিলের ব্রিজের পাশে বিভিন্ন বয়সীদের ভিড়। গাছের নিচে বেঞ্চে বসে আড্ডা দিচ্ছেন তারা। কারও মুখে মাস্ক আছে, কারও নেই। নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখেই কাছাকাছি বসেছেন নারী-পুরুষ। রাস্তায় খেলা করছে শিশু-কিশোররা। এরমধ্যে একদল মধ্য বয়সী নারী-পুরুষকে দেখা গেছে বস্তা-ব্যাগে করে চাল-ডাল নিয়ে ফিরছেন। জানালেন, করোনা উপলক্ষে তেজগাঁও এলাকায় এক ব্যক্তি বিতরণ করেছেন এগুলো।
বেগুনবাড়ি সংলগ্ন হাতিরঝিলের বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের চেকপোস্ট। সেখানে বেশ কয়েক পুলিশের অবস্থান। বাসস্ট্যান্ডের এক পাশে আড্ডা দিচ্ছিলো পাঁচ-ছয় নারী। করোনা সংক্রমন ঠেকাতে বাসায় থাকতে হবে- এ প্রসঙ্গে কথা বললে রহিমা বেগম নামে এক মধ্য বয়সী নারী পান চিবাতে-চিবাতে বলেন, ‘বন্দি থাকতে মুন চায় না। পোলার বাপেও রিকশা নিয়ে বের হইছে। ঘরে খাবার নাই। কাজ-কামও নাই।’ রহিমা জানান, বাসার কাজ করেন তিনি। দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ওই বাসায় যেতে না করে দিয়েছেন গৃহকর্ত্রী। খেয়ে না খেয়ে দিনতাপাত করছে পাঁচ সদস্যের রহিমার পরিবার।

এরমধ্যে হাতিরঝিলের রামপুরা ব্রিজের পাশে পুলিশের চেকপোস্টের সামনে দিয়ে পরপর দুটি ব্যাটারী চালিত রিকশা যেতে দেখা গেলো। একই দৃশ্য দেখা গেছে খিলগাঁও তালতলা এলাকায়। দোকান বন্ধ। হাতে গুনা কিছু মানুষ রাস্তায়। এক ঝাঁক রিকশা। দু’একটি রিকশাতে যাত্রী থাকলেও প্রায় সব রিকশা যাত্রীশূণ্য। রিকশার যাত্রী আদনান ইবনে ফিরোজ জানান, তালতলার কাঁচাবাজারে যেতে বের হয়েছেন। রিকশা চালকরা জানান প্রধান সড়কে গেলে পুলিশ ঝামেলা করে। এজন্য ভেতরের রাস্তায় রিকশা চালাচ্ছেন।

কাকরাইল মোড়ে গাড়ি থামিয়ে চেক করছে পুলিশ। যাচাই করা হচ্ছে জরুরি প্রয়োজন নাকি অযথাই বের হয়েছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই আটক করা হবে গাড়ি। পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, বুঝানো হচ্ছে। তবুও কাজ হচ্ছে না। তাই বেশ কয়েক রিকশা আটক করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে যারাই বের হবে তাদের গাড়িই আটক করা হবে বলে জানান তিনি।

সেগুনবাগিচা, শিল্পকলা এলাকা প্রায় নির্জন। বহুতল ভবনের ছাদে, বারান্দায় দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে রাজপথে তাকাচ্ছিলেন কেউ কেউ। মৎস্য ভবন, হাইকোর্টমোড়, দোয়েল চত্ত্বর এলাকায় পুলিশের কড়া পাহারা। পিকআপ ভ্যানে টহল দিচ্ছে পুলিশ। পলাশী মোড়, কাঁটাবন, হাতিরপুল এলাকায় রাস্তাজুড়ে পুলিশের অবস্থান। কদাচিৎ কোনো গাড়ি আসা-যাওয়া করলেই থামানো হচ্ছে।

রিকশা চালকদের রাস্তায় বের না হতে বুঝানো হচ্ছে। নিউমার্কেট-নীলক্ষেত সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রবেশের রাস্তাটি বন্ধ করা হয়েছে। এরমধ্যে শহীদ মিনারে দেখা মিলেছে ১০-১২ জন নারী-পুরুষের। মধ্য বয়সী মাস্কপড়া এক নারী জানান, বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন। বাসায় থাকতে থাকতে একঘেয়েমি লাগছিলো। বাচ্চা কান্না করছিলো, তাই এসেছেন। তবে বাচ্চার মুখে মাস্ক ছিলো না।

এরমধ্যেই একজন পুলিশ সদস্য তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন। পরে ওই নারীসহ অনেকেই শহীদ মিনার থেকে বাসার উদ্দেশ্যে পা বাড়ান। এসময় সেনবাহিনীর দুটি গাড়ি ওই দিকে টহল দিতে দেখা গেছে। শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান মানবজমিনকে বলেন, আজ গাড়ি, রিকশা তুলনামূলক বেশি নেমেছে। যে কারণে আমরা হার্ডলাইনে যাচ্ছি। নিয়ম না মানলে গাড়ি আটক করা হবে বলে জানান তিনি।

রামপুরা ব্রিজ, হাতিরপুল, কাওরানবাজার, প্রান্থপথ এলাকার প্রায় প্রতিটি মোড়েই সাহায্য প্রত্যাশীদের ভিড় দেখা গেছে। তাদের সবার প্রায় অভিন্ন কথা। কাজ নেই। খাবার নেই। সাহায্যের জন্যই বাসার বাইরে এসেছেন তারা। বিভিন্নস্থানে দেখা গেছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের না হতে অনুরোধ করছে পুলিশ। বুঝানোর চেষ্টা করছে। মাইকিং করা হচ্ছে। হাতিরপুল এলাকায় নিউমার্কেট থানার একটি পিকআপ ভ্যানে করে মাইকিং করছিলো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর