মোনাশ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, তারা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ চিকিৎসায় যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধন করেছেন। মাথার উঁকুনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধ করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ এর কোষকে হত্যা করতে পারে বলে দাবি করেছেন তারা। বলা হয়েছে এই ওষুধটি দুই দিনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সেল বা কোষকে মেরে ফেলতে পারে এবং এই ওষুধটি সব জায়গায়ই পাওয়া যাচ্ছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। তবে সরকারি অনুমোদন বা কোনো ডাক্তারের অনুমোদন ছাড়া কারো উচিত হবে না করোনার চিকিৎসা মনে করে উঁকুননাশক ওষুধ সেবন করা।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ওই বিশ^বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পরজীবী বা মাথার উঁকুন নাশের এই ওষুধ সারাবিশে^ পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষাগারে দেখা গেছে, মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কভিড-১৯ কে মেরে ফেলে এই ওষুধ। মোনাশ ইউনিভার্সিটির ওই গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র এক মাত্রার ইভারমেকটিন (উঁকুননাশক) প্রয়োগ করলে তা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের কোষের কালচার বৃদ্ধি বন্ধ করে দিতে পারে। শুক্রবার মোনাস বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইন্সটিটিউটের ড. কিলি ওয়াগস্টাফ বলেছেন, আমরা দেখতে পেয়েছি একটি মাত্র ডোজ ব্যবহার করলে মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সব ভাইরাস আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক এসিড)কে রিমুভ করে বা একেবারে সরিয়ে ফেলে।
এটি হলো ভাইরাসের সব রকম জেনেটিক বিষয়। মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাস্তবেই যে তা হচ্ছে তা দেখা গেছে।
কিভাবে ইভারমেকটিন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে তা জানা যায় নি। তবে তা মানুষের দেহের সক্ষমতাকে নষ্ট করা কমিয়ে দেয়। এখন বিজ্ঞানীদের কাজ হলো, এই ওষুধটি মানুষের শরীরের জন্য উপযোগী করে তার ডোজ বা মাত্রা নির্ধারণ করা। নির্ধারণ করতে হবে যে, তা মানব শরীরের নিরাপত্তা রক্ষা করে কি পরিমাণে ব্যবহার করা যাবে। ড. ওয়াগস্টাফ বলেন, যখন আমরা বৈশি^ক একটি মহামারিতে পড়ি ্এবং এর কোনো অনুমোদিত চিকিৎসা পাওয়া যায় না, সে সময় যদি আমাদের কাছে এমন কিছু থাকে, যা সারাবিশে^ পাওয়া যাচ্ছে, আমার মনে হয় দ্রুতই তা আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে। যতক্ষণ এ মহামারির টীকা আবিষ্কার না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের চিকিৎসা বাস্তবসম্মত হতে পারে।
তবে ইভারমেকটিনকে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করার আগে এর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা এবং ক্লিনিক্যাল ট্র্যায়ালের প্রয়োজন আছে। আর সে জন্য প্রয়োজন তহবিল। অনুমোদিত পরজীবী বিরোধী ইভারমেকটিন এইচআইভি, ডেঙ্গু ও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাসঘটিত রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর দেখা গেছে। এই গবেষণা যৌথভাবে করেছে মোনাশ বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইন্সটিটিটউট এবং পিটার ডোহার্টি ইন্সটিটিউট অব ইনফেকশন অ্যান্ড ইমিউনিটি। গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে এন্টিভাইরাল রিসার্সে।