বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে কাজ করেন তিন বিদেশি কিউরেটর। প্রধান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা শ্রীলঙ্কান। বর্তমানে তিনি ঢাকাতেই আছেন। গোটা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে অস্থির, তখন শ্রীলঙ্কার অবস্থা অনেকটাই ভালো। এছাড়াও কিছুটা ভয় ও আতঙ্ক থাকলেও ভালো আছেন ভারতীয় দুই কিউরেটর। নাগপুরের প্রবীন হিংগানিকার বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। আর গোয়ালিয়রের সঞ্জীব আগারওয়াল আছেন সিলেটে। দু’জনই মুঠোফোনে দৈনিক মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন তারা ভালো আছেন।
সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছেন স্টেডিয়ামে। বিসিবি নিয়মিত তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে বলেও জানান এ দুই কিউরেটর। অন্যদিকে বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম জানিয়েছেন, সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বিদেশি কিউরেটরদের সঙ্গে। তারা হোম কোয়ারেন্টি থেকেই কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বিদেশি কিউরেটরদের খেয়াল রাখা হচ্ছে। তাদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেটাও দেখছি আমরা। আপাতত হোম কোয়ারেন্টিনে আছে তারা।’
ভালো থাকার একটাই উপায়- সচেতনতা: প্রবীন হিংগানিকার
গত বছর থেকে বাংলাদেশের কিউরেটর হিসেবে কাজ করছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার প্রবীন হিংগানিকার। নাগপুরেই রয়েছে তার পরিবার ও ক্রিকেট একাডেমি। বর্তমানে তিনি দেখাশোনা করছেন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। তিনি বলেন, ‘কিছুটা সময় কোয়ারেন্টিনে আর কিছুটা মাঠের কাজ করে কাটছে। দুই সপ্তাহ আগে স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। সেখানে উইকেটে পানি দেয়ার কাজটা দেখাতে হয়। আর কিছু ব্যবস্থাপনা ছিল। এখন বাসায় আছি। কিছুটা চিন্তা আর আতঙ্কে আছি পরিবার নিয়ে। সবাইকে একটাই কথা বলেছি যেন বাসা থেকে বের না হয়। নিয়ম করে হাত ধোয় ও পরিষ্কার থাকে। আমি মনে করি, এই বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হলো সচেতন থাকা। বাইরে না যেয়ে ঘরে থাকা। আর প্রয়োজনে বাইরে গেলেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা।’
বিসিবি খোঁজ-খবর নিচ্ছে বলে দারুণ খুশি প্রবীন। তিনি বলেন, ‘বিসিবি দারুণ কাজ করেছে। তারা আমাদের বাসায় থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে অনেক আগেই। আমাদের গ্রাউন্ডের কর্মকর্তা বাতেন খোঁজ নিচ্ছে ফোন করে। এছাড়াও আরো অনেকেই জেনেছে কেমন আছি। সত্যি কথা বলতে ভালো আছি। বাসায় থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব নিরাপদে রাখছি। স্টেডিয়ামে যাওয়ার প্রয়োজন হলে যাব।’
চিন্তা থাকলেও ভয় পাচ্ছি না: সঞ্জীব আগারওয়াল
ভারতের গোয়ালিয়রের সঞ্জীব আগারওয়ালের বাড়ি। করোনায় ভারতের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে সঞ্জীব জানালেন তার পরিবার ভালো আছে। তিনি বলেন, ‘করোনায় সারা বিশ্বই আতঙ্কে। ভারতেও পরিস্থিতি ভালো নয়। পরিবার নিয়ে চিন্তা তো আছেই। তবে ভয় পাচ্ছি না। কারণ সেখানে আমার স্ত্রী-সন্তান ছাড়াও যৌথ পরিবারে অনেকেই আছে। সবাইকে একটা কথাই বলেছি যেন বাসা থেকে না বের হয়। আর নিয়মগুলো মেনে চলে। ভিডিও কলে ওদের খবর নিচ্ছি। যতটা জানি খুবই ভালো আছে তারা। কারো কোন সমস্যা হয়নি।’
হোম কোয়ারেন্টিনে থেকেই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম দেখাশোনা করছেন সঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘আজও মাঠে গিয়েছিলাম বিকেলে। কারণ উইকেটে পানি দেয়া, ঘাসের যত্ন নেয়া খুবই দরকার। তবে আমি মাঠে যাচ্ছি সব নিয়ম মেনে, সতর্ক থেকে। আমার সঙ্গে যারা কাজ করে তাদেরও একইভাবে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেন তারাও সচেতন ও সতর্ক থাকে। আসলে এই রোগে এছাড়া আর করণীয় কিছু নেই। যতটা সম্ভব বাসায় থাক আর নিয়মিত হাত ধুয়ে পরিষ্কার থাক।’
বিসিবির ওপর দারুণ সন্তুষ্ট সঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘বিসিবি করোনায় তাদের স্টাফদের নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করছে। সবার পাশে আছে তারা। ঢাকা থেকে আমাকে নিয়মিত ফোন দিয়ে কেউ না কেউ খবর নিচ্ছে। এর মধ্যে বাতেন (সৈয়দ আবদুল বাতেন) ভাই যোগাযোগ রাখছেন ফোন দিয়ে। পরিস্তিতি যেমনই হোক এখন পর্যন্ত ভালো আছি। বাংলাদেশের মানুষদের অনুরোধ সবাই যেন নিয়ম মনে চলে।’