ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নে সৌদি আরব থেকে এক প্রবাসী দেশে আসেন। আসার পর নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করোনা কন্ট্রোল কর্নারের পক্ষ থেকে তাকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কিন্তু তিনি হোম কোয়ারেন্টিনের সমস্ত শর্ত ভঙ্গ করে সবকিছুই করেছেন। অবশেষে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে তার স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হয়।পরীক্ষায় ধরা পরে করোনা পজেটিভ। দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে। এই এক ব্যাক্তর অসচেতনতায় ওই এলাকার শতাধিক ব্যক্তিকে হোমকোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষার জন্য ৬ জনের স্যাম্পল কালেকশন করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরকেও স্যাম্পল কালেকশন করে পরীক্ষা করা হবে। এ ব্যাপারে কথা হয় নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা কন্ট্রোল কর্নারের ফোকাল পার্সন ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপের সঙ্গে।
তিনি জানান, সৌদি ফেরত ওই প্রবাসীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরপরই তাকে চিকিৎসারর জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এলাকার শতাধিক ব্যক্তিকে হোম কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু ব্যক্তির স্যাম্পল কালেকশন করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র একজনের অসচেতনতার কারণে আজ শতাধিক ব্যক্তিকে হোমকোয়ারান্টিনে থাকতে হচ্ছে। হোম কোয়ারন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের যদি ১৪ দিনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তখন তাদেরকে আবার ঢাকায় প্রেরণ করা হবে। এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখনো যারা বাজারে রাস্তাঘাটে অযথা আড্ডায় মেতে আছেন, আপনারা পারতপক্ষে ঘর থেকে বের হবেন না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, গবেষকরদের মতে নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বাতাসে ৩০ মিনিটের মতো ভেসে থাকতে পারে এবং ১৪ দশমিক সাত ফুট যাতায়াত করতে পারে। গবেষকরা আরও জানান- শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে নির্গত হওয়ার পর ভাইরাসটি কঠিন পৃষ্ঠে কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে এবং স্পর্শের মাধ্যমে অন্যের শরীরে চলে যেতে পারে। ভাইরাসটি কতক্ষণ সক্রিয় থাকবে, তা নির্ভর করছে পৃষ্ঠের ধরন ও তাপমাত্রার ওপর। প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটি কাঁচ, কাপড়, ধাতু, প্লাস্টিক ও কাগজের ওপর দুই থেকে তিন দিন টিকে থাকতে পারে।
সূত্র জানায়, উপজেলার বাহ্রা গ্রামে ওই প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় গ্রামের দু'টি মসজিদে জামাতে নামাজ পড়েছেন। মানুষের সাথে কোলাকুলি করেছেন।বেড়াতে এবং দাওয়াত খেতে গিয়েছেন। গ্রামের পুকুরে গোসল করেছেন। বাজারে দোকানে আড্ডা দিয়েছেন। ওই প্রবাসীর বাড়িতে আর্সেনিক মুক্ত টিউবওয়েল থাকার কারণে আশপাশের প্রায় ত্রিশটি পরিবার পানি নিয়েছে।