× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একটি নির্মম মৃত্যু

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ৭, ২০২০, মঙ্গলবার, ১:০২ পূর্বাহ্ন

বেস গিটারিস্ট খাইরুল আলম হিরু (৩০)। তবে নারায়ণগঞ্জের সঙ্গীত জগতে হিরো লিসান নামে ব্যাপক পরিচিত মুখ তিনি। বাসা শহরের দেওভোগ চেয়ারম্যান বাড়ি (কৃষ্ণচূড়া মোড়) এলাকায়। গত ২৬ মার্চ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে নারায়ণগঞ্জের মেডিনোভা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সেবা নেয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। পরে নিজ থেকেই আইইডিসিআর এর হট লাইনে দু’দিন চেষ্টা করেও করোনা ভাইরাসের টেস্টের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এক পর্যায়ে সোমবার রাতে হিরুর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স আনে।
কিন্তু বাঁধা দেয় এলাকাবাসী। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এলাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেয়া যাবে না অজুহাতে প্রায় ১ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে তারা। কখনো ফতুল্লা থানা পুলিশ আবার কখনো সদর থানা পুলিশের অনুমতি নিতে নিতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হিরু। ফলে মৃতদেহ পড়ে থাকে বাড়ির গেটের ভেতরেই। এমন অভিযোগ নিহত হিরুর বড় ভাই আবু নাঈমের।
তিনি আরোও বলেন,  গত ২৬ মার্চ থেকে জ্বর, ঠান্ডা, গলা ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। পরে নারায়ণগঞ্জের মেডিনোভা, ঢাকা মেডিকেলসহ বেশ কজন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিলেও তারা কেউ করোনাভাইরাসের পরীক্ষার পরামর্শ দেয়নি আমার ভাইকে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আবু নাঈম বলেন, মৃত্যুর পর প্রায় ৯ ঘন্টা হলো, আমার ভাইয়ের লাশ বাড়ির সামনে মেঝেতে পড়ে আছে। কেউ দাফনের জন্য আসেনি। দাফনের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হলে তিনিও ফোন কেটে দেন। ডিআইটি মসজিদ দাফন কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়ে দেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া কাউকে তারা দাফন করেন না। এলাকাবাসী বা প্রশাসন নিজেরাও কিছু করছে না, আমাদেরও কিছু করতে দিচ্ছে না। বাড়িতে তিনজন নারী ও একটি শিশু ছাড়া কেউ নেই। এ অবস্থায় কী করব, কোথায় যাবো?
এদিকে খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আফরোজা হাসান বিভা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোস্তফা আলী শেখ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতে লাশ স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পরিবার ও বাড়ির সকলকে আপাতত হোম কোয়ান্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। মৃতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে নিহতদের স্বজনদের জানিয়ে দেয়া হয়।
ওদিকে বেস গিটারিস্ট হিরো লিসানের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার সহকর্মীদের মাঝে। শোকে মু্হ্যমান পরিবারের সদস্যা। নিহত হিরোর স্ত্রী ও এক বছরের এক সন্তান রয়েছে।
হিরোর লাশ যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন স্বজনদের কেউ ছিল না পাশে। বিদায় বেলায় শেষবারের মতো তার মুখটাও দেখতে পারেনি তারা। হায়রে মৃত্যু! কি নির্মম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর