হাওর জুড়ে পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বন্ধ দোকানপাঠের তালিকায় কামারশালা অন্যতম। এতে দাওয়া-মাড়াই উপকরণ সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক শ্রমিকগন। স্বপ্নের ফসল ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে হাওরাঞ্চলের আবাদীদের।
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা নিকলী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২১ হাজার ৪শ হেক্টর এলাকার উপজেলাটিতে মোট ফসলী জমি ১৯ হাজার ৯৮০ হেক্টর। প্রধান ফসল বোরো আবাদ হয় ১৫ হাজার ২শ হেক্টরে। মাত্র ২৯ হাজার ২৮৭ মেট্রিক টন খাদ্য চাহিদার এ উপজেলা উৎপাদন করে ৬৬ হাজার ৫৪৭ মেট্রিক টন। যা চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণ। আধুনিক যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতায় চাষাবাদ থেকে শুরু করে দাওয়া-মাড়াই পর্যন্ত হাওরাঞ্চলের কৃষক শ্রমিকগণ মধ্যযুগীয় যন্ত্রপাতি নির্ভর। কাস্তের মতো সাধারণ কিন্তু অতীব প্রয়োজনীয় এসব সামগ্রির প্রধান উৎস কামারশালা।
মেরামত বা কাজের উপযোগি করতেও একমাত্র সমাধান কামারশালা। কৃষি শ্রমিক নিকলী সদরের নয়াহাটি গ্রামের মরু মিয়া জানান, জমি কাটায় যাইবো ক্যামনে, কাঁচি (কাস্তে) তো পাইতাছি না। কামারের দোকান বন্ধ। হাট বাজারও বন্ধ। ঘরে যেইটা আছে হেইডারেও মেরামত করার ব্যবস্থা নাই।পুকুরপাড়ের মাড়াই কল মালিক কাদির মিয়া বলেন, এক বছর যাবৎ মাড়াইকলডা পরা। দাঁতমাত ভোঁতা অইয়া রইছে। কিছু কামকাজ না করাইলে কল লইয়া মাঠে গেলে কি অইবো। কামার আর ওয়ার্কসপ বন্ধ। ঠিক করানির লাইগ্যা দৌড়তাছি। নিকলী সদরের নতুন বাজার এলাকার মিন্টু কর্মকার বলেন, যারা দোকান খুলে তাদেরকেই জরিমানা করে। গরীব মানুষ আমরা। দিন আনি দিন খাই। দোকান বন্ধ। যে অবস্থা চলতাছে ভাই, ঘরের খাওনই তো নাই। জরিমানা দিবাম ক্যামনে।
নিকলী উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসফিয়া সিরাত জানান, জরুরি কোন কিছু বন্ধ নয়। তবে কৃষি উপকরণ সামগ্রির দোকান খোলা যাবে কি না তা ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে জানাবো।