× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লকডাউন এলাকায় নানা অজুহাতে বের হচ্ছে মানুষ

অনলাইন

নুরেআলম জিকু
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ৯, ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৬:০৫ পূর্বাহ্ন

দুপুর ঠিক ১টা ২৭ মিনিট। লকডাউন পীরেরবাগে তখনো এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করছেন তিন বন্ধু। বিভিন্ন বাসার অলিগলিতে আছেন আরো বেশ কয়েকজন। একটু পরে পুলিশ আসার শব্দ পেয়ে সবাই ছুটছেন বাসার দিকে। পুলিশ সবাইকে সর্তক করে চলে যাওয়ার পর ফের রাস্তায় ফিরছেন কেউ কেউ। তাদের একজন সেলিম ব্যাপারী। পেশায় গাড়ি চালক। কথা হলে তিনি জানান, বাসার জন্য কেনাকাটা করতে বের হয়েছেন।
তাছাড়া দিনরাত বাসায় থাকতে বিরক্তি লাগছে। তিনি বাসার বাহিরে বের হলেও লোকজন থেকে দুরে থাকেন। গত ৩দিন আগে পীরেরবাগে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তেমন একটা বের হননি। সেলিম ব্যাপারীর মতো আরো অনেকেই নানা অজুহাতে বাসার বাহিরে এসে আড্ডা আর গল্প করতে দেখা গেছে।

বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে বাংলাদেশেও মারা গেছেন ২১জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩০ জন। এর মধ্য অধিকাংশ রাজধানী ঢাকার মানুষ। ঢাকায় করোনা সংক্রমণের গতি দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে যেসব এলাকায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সেসব এলাকা লকডাউন করে দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তায়। তবে লকডাউন করা এলাকার জনগণ নানা অজুহাত দিয়ে বাসার বাহিরে বেপরোয়াভাবে চলাচল করতে দেখা গেছে। এতে আশপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয় কাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানীর শতাধিক এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার পর্যন্ত লকডাউন করা বাড়ির সংখ্যা সহস্রাধিক ছাড়িয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে জনগণকে বাধ্য করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে। যে ভবনে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে ঐ ভবনসহ আশপাশের ভবন ও লকডাউন করা হচ্ছে। রাজধানীর হাজারীবাগ, উর্দু রোড, বুয়েট এলাকা, লালবাগ, ইসলামপুর, লক্ষ্মীবাজার, নারিন্দা, সোয়ারীঘাট, ওয়ারী, কোতোয়ালি, বংশাল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, আদাবর, মোহাম্মদপুর, বসিলা, ধানমন্ডি, জিগাতলা, সেন্ট্রাল রোড, গ্রিনরোড, শাহবাগ, পুরানা পল্টন, ইস্কাটন, বেইলি রোড, মগবাজার, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডা, ভাটারা, নিকুঞ্জ, আশকোনা, উত্তরা, গুলশান, মহাখালী, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০ নম্বর, মিরপুর-১১ নম্বর, মিরপুর-১৩ নম্বর, মিরপুর-১ নম্বর, শাহ আলীবাগ, টোলারবাগ, উত্তর টোলারবাগ, পীরেরবাগ এলাকায় লকডাউন চলছে। মিরপুর-১ নম্বরের বাসিন্দা আবির হোসেন জয় জানান, ওভারব্রিজ সংলগ্ন গলির মাথায় ৩টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে কয়েক দিন আগে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকেকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজনকেও মহল্লার নেতারা সচেতন করেছেন। তবে কেউ সেদিকে পাত্তা দিচ্ছেন না। যে যার মত করে বের হচ্ছেন। আবার ফিরছেন। অনেকেই বাসার নিচে দাঁড়িয়ে ধুমপান করছেন। এতে যেকোন সময় বড় ধরনের বিপদে পড়তে হবে মহল্লার জনগণকে। মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে মো.ইব্রাহিম জানান, করোনার কারণে এলাকার রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হলেও মানুষ থেমে নেই। আগের মতোই এখনো রাস্তাঘাটে মানুষ নামছে। পুলিশ তাদেরকে নিষেধ করলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। নিকুঞ্জ থেকে দিলীপ শীল জানান, এলাকায় করোনা  ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর লোকজনের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। কার্যত লকডাউন এরিয়া এটি। বাসা থেকে কেউ বের হলেই প্রশাসন ও সোসাইটির লোকজন জেরা করে। বিশেষ প্রয়োজনে নিত্যপণ্যের কেনাকাটার জন্য সুরক্ষা মাস্ক নিয়ে বের হওয়া যাচ্ছে। সব সময় বাসায় থাকতে কিছুটা অসুবিধার হলেও এই বিপদের সময় মেনে নিতে হবে।

লকডাউন করা এসব এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ খাবার কিংবা কাজের খোঁজে বাইরে যাতায়াত করছে। স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন সহযোগীতা করা হলেও অনেকে ঢাকার ভোটার না হওয়ায় সাহায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পুলিশ বলছে, জরুরি কাজে এলাকার বাসিন্দারা বের হতে পারছেন। এছাড়া লকডাউন করা এলাকায় কাউকে প্রবেশ কিংবা বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। আশেপাশের দোকানপাটও বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয়রাও অনেকেই নিজ উদ্যোগে ভবন লকডাউন করে দিয়েছেন। যারা প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে যাচ্ছেন তারা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলেন তার জন্য বাববার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর