× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হায় আমাদের রাষ্ট্র

মত-মতান্তর

শহীদুল্লাহ ফরায়জী
৫ মে ২০২০, মঙ্গলবার

৫৪ দিন ব্যাপক নির্যাতনের শিকার একজন সাংবাদিক। শারীরিক মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ।নিষ্প্রাণ, ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে,চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ।অপহরণকারীরা তাঁর হাত পা চোখ মুখ বেঁধে রাখতো সব সময়। কি দুঃস্বপ্ন কি ভয়ংকর সময় কাটাতে হয়েছে! অপহরণকারীরা যখন দয়াবশত হয়ে হাতের বাঁধন খুলে দিলো তখন রাষ্ট্র অতি উৎসাহে পিঠমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে সশস্ত্র পাহারায় আদালতে তুলে কারাগারে পাঠিয়ে দিলো।
এসব উপনিবেশিক গণবিরোধী রাষ্ট্রের সংরক্ষিত স্মৃতিচিহ্ন।মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি নয়।নাগরিকের সাথে ন্যায় ও সম্মানজনক সম্পর্কের চুক্তি রাষ্ট্র ভয়ংকর ভাবে লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

অপহরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার পরও নিজ রাষ্ট্রে ফিরে আসা নাগরিকের বিরুদ্ধে ভারত থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে মামলা করা হয়েছে। ৫৪ দিনের নির্যাতনে স্মৃতি শক্তি বিপন্ন মৃত্যুপথযাত্রী নাগরিকের মানসিক সুরক্ষার বিন্দুমাত্র বিবেচনা না করেই কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।শেষে ৫৪ধারায় গ্রেফতার করে রাষ্ট্র তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছে।
নাগরিক অপহরণ গুম এটা রাষ্ট্রের দায় না হয়ে নাগরিক দায় হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। যাকে জোর করে সীমান্তের ওপারে নিয়ে গিয়ে এবং সীমান্তের মাঠে ছেড়ে দিলে সে নাগরিক কি নিজ দেশে না ফিরে ভারতে প্রবেশ করলে কি অনুপ্রবেশকারী
হতোনা?
যে নাগরিক ভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশকারী সে নাগরিক নিজ দেশে অনুপ্রবেশকারী হয় কি করে?
রাষ্ট্রের নৈতিকতা ব্যতিত রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায় নাগরিকদের অস্তিত্ব মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
সাম্য মানবিক মর্যাদা সামাজিক সুবিচারের বাংলাদেশে একজন নাগরিককে পিঠমোড়া করে হাতকড়া পরানোর মাধ্যমে প্রমাণ হয় রাষ্ট্রের নৈতিক অবক্ষয় কতো প্রকট, নৈরাজ্যে নিপতিত হওয়ার বিপদ এবং রাষ্ট্রের সভ্যতার স্তরের নিম্নে নেমে যাওয়া।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর এক কোটি নাগরিক দেশে ফিরে এসেছেন পাসপোর্টবিহীন।আজ যদি কেউ প্রশ্ন করে তাদের বৈধতা নিয়ে সে রাষ্ট্র অস্তিত্ব বিলীন হবে। স্বাধীন দেশের নাগরিককে জোর করে অন্যদেশে নিয়ে গেলে সে কোথায় ফিরবে তার জবাব রাষ্ট্রকেই দিতে হবে।
ভারতের মোতিলাল নেহেরু বলেছিলেন " আমাদের মৌলিক অধিকারগুলিকে এমন পদ্ধতিতে অনুমোদন দিতে হবে যেটা কোনো পরিস্থিতিতেই তাদের প্রত্যাহারকে অনুমোদন দিবেনা।" কিন্তু জাতি হিসাবে আমাদের দুর্ভাগ্য সব মৌলিক অধিকার সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত হওয়ার পরও রাষ্ট্র তা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এসবের জন্য একদিন জাতিকে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত মূল্য দিতে হবে।

গীতিকবি
৫ মে, ২০২০।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর