লকডাউনের মধ্যেই কলকাতায় অনেক রুটে চালু হলো সরকারি বাস পরিষেবা। জরুরি প্রয়োজন ও সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কলকাতা, হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগণায় বাস পরিষেবা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে পরিবহন নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আপাতত ১৩টি রুটে চলবে এই বাস। আগেই অবশ্য ৬টি রুটে সরকারি বাস চালানো হচ্ছিল স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা মাথায় রেখে। বুধবার থেকে ১৩টি রুটেই চালু হয়েছে সরকারি বাস পরিষেবা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বহু মানুষ কাজে যোগ দিতে চাইছেন। কিন্তু বাস পাচ্ছেন না। তাই এই সিদ্ধান্ত।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বেসরকারি বাস চলাচলও শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে বেসরকারি বাস মালিকরাই ভাড়া কি হবে, তা ঠিক করে নেবেন। সবুজ জোনে অর্থাৎ নিরাপদ জেলাগুলিতে বেসরকারি বাস চলাচলের অনুমতি সরকার আগেই দিয়েছে। জানা গেছে, বাসের পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষে অ্যাপ ক্যাব পরিষেবাও চালু করে দেয়া হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর ও বিধাননগরে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, সরকারি বাসগুলি এক ঘন্টা অন্তর চলাচল করবে। প্রতি বাসে ২৫ জন যাত্রী নেয়া হবে। প্রত্যেক যাত্রীর মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাঝ পথে ২০ জন যাত্রীর মধ্যে কেউ নেমে গেলে সেখানে নতুন যাত্রী নেয়া হবে। সরকাররি বাসের ভাড়া অবশ্য আগের মতই অপরিবর্তিত থাকছে। পরিষেবা চালু থাকবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। যেসব রুটে বাস চালানো হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে হাওড়া থেকে কামালগাজি, নিউ টাউন, গড়িয়া, ঠাকুরপুকুর এবং বারুইপুরগামী বাস। এ ছাড়াও এসপ্ল্যানেড-আমতা, ডানলপ-বালিগঞ্জ, যাদবপুর-করুণাময়ী, জোকা-বারাসাত, উল্টোডাঙা-সল্টলেক, গড়িয়া-বারাসাত এবং টালিগঞ্জ-নিউ টাউন রুটে বাস চলছে। সূত্রের খবর, লকডাউন চললেও ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু হওয়ায় একাধিক জরুরি প্রয়োজনে মানুষকে বাইরে বেরোতে হচ্ছে। সেকথা মাথায় রেখে ধীরে ধীরে বাস পরিষেবা বাড়ানো হয়েছে। তবে জোর করে যাত্রীদের বাসে ওঠা কীভাবে ঠেকানো যাবে তা নিয়ে চিন্তিত চালক ও কনডাক্টরদের একাংশ। ইতিমধ্যেই কয়েক জায়গায় এই ধরণের নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। তবে বলা হয়েছে, এই বিষয়টি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করবে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের লাল জোনকে এ, বি ও সি এই তিনভাগে ভাগ করে কোথায় কতটা শিথিল করা হবে বিধিনিষেধ তা জানিয়েছেন। বলা হয়েছে, এ তালিকাভুক্ত এলাকায় কঠোরভাবে চলবে লকডাউন। বি এলাকায় কিছু ছাড় দেওয়া হবে। আর সি ভুক্ত এলাকায় অনেকটাই ছাড় দিয়ে জনজীবন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে। তবে সবাইকেই স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে বলে জানানো হয়েছে।