আল্লামা শফি বেহুঁশ। কোন সিদ্ধান্ত দিতে অক্ষম। তাই হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী। এমন গুজবে তোলপাড় চলছে হেফাজতে ইসলামীর অনুসারীদের মধ্যে।
রবিবার বিকেলের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এমন গুজব। যার প্রতিক্রিয়া চলছে এখনো। যা আল্লামা শাহ আহমদ শফী অসুস্থ শরীর নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় এ দাবি নাকচ করে দেন।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, মাদ্রাসার জন্য আমি কী করেছি, না করেছি তা সকলেরই জানা। সারাটা জীবন মাদ্রাসার জন্য নিজেকে কোরবানি দিয়েছি।
কাউকে নায়েবে মোহতামিম অথবা জিম্মাদার করে দিইনি। যা কিছু করার মাদ্রাসার শুরা মজলিসে করবে।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে একই কথা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল্লামা বাবুনগরীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে একজন মুঠোফোনে বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিচালিত হয় শুরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। কে কী বলল, না বলল এসবে হুজুরের (বাবুনগরীর) কোন আগ্রহ বা সম্পৃক্ততা নেই।
নাম না জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, ২০১৭ থেকে বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ মজলিসে শুরা কর্তৃক নিযুক্ত হাটহাজারী মাদরাসার মুঈনে মোহতামীম। সেখানে কিছু আলেম হাটহাজারী মাদ্রাসার নতুন পরিচালক নিয়োগ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। তাদের একটি অংশ হাটহাজারী মাদ্রাসার মসজিদে এসে শোরগোলও করেছে। এরপর বাবুনগরী সাহেবকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ঘোষণা করে দেয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ওই নেতার দাবি, হেফাজতের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ তৈরি করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে। এর অংশ হিসাবে সম্প্রতি হাটহাজারী ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক থেকে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম বা হাটহাজারীর বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে আল্লামা শফিকে সরিয়ে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে বসানোর পরিকল্পনা করা হয়।
মাদ্রাসার সূত্রমতে, হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক কে হবেন তা ঠিক করবেন শুরা কমিটি। বাইরের কেউ করবে না। কেউ করলেও সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। আহমদ শফির ভিডিও থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার, যারা বলছিলো শায়খুল ইসলাম বেহুঁশ, কথা বলতে পারে না, কাউকে চিনে না। তা আল্লামা শফির ভিডিও বার্তায় সমপূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হলো।
হেফাজত নেতাকর্মীদের ভাষ্য, আল্লামা আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরী দুইজনই আমাদের কাছে সম্মানিত। তাঁদের সম্মান রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তবে সর্বজনস্বীকৃত আল্লামা আহমদ শফীর পরের স্থান আল্লামা বাবুনগরীর। বাবুনগরী সাহেবকে বার বার শায়খুল ইসলামের প্রতিপক্ষ করার কী হেতু! শায়খুল ইসলাম জীবিত থাকতে কেন তারা বাবুনগরীকে শায়খুল ইসলামের জায়গায় বসাতে চান?