ঈদ মানেই আনন্দ । নতুন পোশাক। একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি। হাত মেলানো বা মুসাফা করা। পরিবারের সবাই একসঙ্গে হওয়া। সবার খোজখবর রাখা। দুনিয়াব্যাপী মুসমান বা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন হলো দু' ঈদ। এরমধ্যে একটি হলো ঈদুল ফিতর এবং অপরটি ঈদুল আযহা ।
আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। ৩০ দিন রোযা শেষে খুশির ঈদ ! তাইতো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ , আপনাকে তুই বিলিয়ে দে , শোন আসমানী তাক্বিদ। ঈদ মানে আনন্দ বা খুশির দিন হলেও এবারের ঈদ সব অর্থেই ব্যতিক্রম। কোথাও নেই কোন আনন্দ। সব জায়গাতেই যেন অপ্রাপ্তি। হাহাকার। মহামারী করোনা ভাইরাস যেন আমাদের আনন্দের ঈদ তছনছ করে দিয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে মুসলমানদের। ইসলামের বিধান অনুযায়ী প্রতিবছর খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হলেও এবার নামাজ আদায় হয়েছে সীমিত পরিসরে। ভিন্ন ভিন্ন জামাতে নামাজ আদায় করতে হয়েছে ছোট পরিসরে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে মাস্ক পরে যেতে হয়েছে নামাজে। অনেকেই আবার যেতে পারেননি জামাতে নামাজ আদায় করতে। তারা ঈদের নামাজ আদায় করেছেন বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে। দূর পাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় অনেক মানুষ ছুটে যেতে পারেনি আত্মীয়-স্বজনের কাছে। যারা কাছে থাকেন তাদের অনেকে আবার হেটে ছুটে গেছে প্রিয়জনের কাছে। দীর্ঘ লকডাউনের কারণে মানুষের সে অর্থে কাজ নেই। নেই উপার্জন। হাতে নেই অর্থ। অনেকের ঘরে নেই পর্যাপ্ত খাবার। তাপরপরও ঈদ। কিন্তু লকডাউন এবং নানা সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ নতুন জামা-কাপড় বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে পারেনি। অন্যদিকে ঈদের কয়েকদিন পূর্বে ঘূর্ণিঝড় "আমপান " আঘাত এনেছে দেশের নানা জায়গায়। এতে বেশ কয়কজন প্রাণ হারিয়েছে এবং অসংখ্য বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি, ফলমূল এবং গাছপালা। অনেকের পথে বসার উপায় হয়েছে। কেউবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন হাসপাতালে। একদিকে করোনা মহামারী। অন্যদিকে "আমপান" এর আক্রমণ। মানুষ যেন বিষে নীল হয়ে গেছে। ঈদ মানেই যেন বয়ে আনে আনন্দ। ঈদ মানেই যেন হয় খুশি। আনন্দ-খুশিহীন এমন ঈদ যেন আর না আসে আমাদের মাঝে। করোনা মহামারী যেন দূর হয় অচিরেই। আবার যেন হাসি ফিরে আসে মানুষের মনে ও মুখে।