দিনাজপুরে কোনো প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে কখনো নদীর পাড় কেটে, কখনো আবার আবাদি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল। এতে নদীর গতিপথ হারানোর পাশাপাশি মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। অন্যদিকে বালু বহনে নিয়োজিত বেপরোয়া ১০ চাকার ভারি ট্রাক এবং ট্রাক্টরগুলো প্রতিনিয়ত শব্দ ও পরিবেশ দূষণের সঙ্গে নষ্ট করছে রাস্তা-ঘাট।
খানসামা উপজেলা চেয়ারম্যান মো হাতেম বলেন, করোনা ভাইরাসের ক্লান্তি লগ্নেও লকডাউন মানছে না বালু ইজারাদার ও ট্রাক্টরের মালিকরা। বালু নিয়ে বেপরোয়াভাবে ট্রাক্টর চলাচল করায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুুষ। এ ছাড়াও মহাসড়কে চলাচলের জন্য অনুমোদিত ১০ চাকার ভারি ট্রাকগুলো গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় এসব রাস্তা ভেঙে ও দেবে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বীরগঞ্জ উপহেলার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো রমিজ আলম সরজমিন ঝাড়বাড়ি এলাকায় পরিদর্শন করে, এই ভয়াবহ এই করোনা পরিস্থিতির লকডাউন মূহুর্তে অবৈধ পদ্ধতিকে বালু উত্তোলন ও বহনে বিধি নিষেধ জারি করেছেন। কিন্তু তাও মানছেন না বালু ইজারাদাররা। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগেই তিনি তার এলাকায় বালুবাহী এই ১০ চাকার ভারি ট্রাক চলাচল যাতে না করতে পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।
এনিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সভার আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাতে বালুবাহী এই ১০ চাকার ভারি ট্রাক চলাচল যাতে না করতে পারে। কিন্তু,তারপরও দিব্যি বালু বহনে এই ১০ চাকার ভারি ট্রাক চলাচল করছে।
সরজমিন দেখা যায়, পূণর্ভবা, আত্রাই, ধলেস্বর, গর্ভেশ্বর, ইছামতি, ছোট যমুনা, তুলাই, কাঁকরা, ঢেপাসহ দিনাজপুরের বিভিন্ন নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে, কখনো নদীর পার কেটে, আবার কখনো আবাদি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছে, এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল। এতে নদী তার গতিপথ হারাচ্ছে। পাড় ভেঙে নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বিরল রানী পুকুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক আযম বলেন, একারণেই শুষ্ক মৌসুমেও জমে থাকা পানিতে গোসল করতে নেমে চোরা গর্ত ও বালুর খাদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে অনেকেই। জেলার কয়েকটি নদীতে গত ৫ বছরে এভাবেই প্রাণ হারিয়েছে ২৭ জন। শুধু তাই নয়, অবৈধ পদ্ধতিকে বালু উত্তোলণের ফলে মারাত্মকভাবে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। তিনি বলেন, শুধু নদী থেকেই নয়, কোথাও নদীর পাড় কেটে, কোথাও নাম মাত্র টাকা দিয়ে, আবার কোথাও জোড়পূর্বক অন্যের ফসলি জমি কেটে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এসএইচএম. মাগ্ফুরুল হাসান আব্বাসী বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।