× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনাকালে ভারতে যৌনকর্মীদের দিনকাল

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) মে ৩০, ২০২০, শনিবার, ১:১২ পূর্বাহ্ন

দু’মাস ধরে খুব কমই ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন লক্ষ্মী (ছদ্মনাম)। কিন্তু প্রতি রাতে সন্তানদের বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে মেকআপ নেন তিনি। লক্ষ্মী একজন যৌনকর্মী। মেকআপ নিয়ে খদ্দেরের ফোনকলের আশায় অপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আমি খুব সামান্য অর্থই উপার্জন করতে পেরেছি। যেখানে আপনি অন্যের সঙ্গে করমর্দন করতে পারবেন না, সেখানে কিভাবে আমরা আমাদের পেশা চালিয়ে নেবো। দু’এক সপ্তাহ আগে আমার এক বন্ধু আমাকে বললো, সে তার খদ্দেরদের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলে। তবে এতে তাকে খুব বেশি অর্থ দেয়া হয় না।
তবে নাই মামার চেয়ে তো কানা মামা ভাল। ভারতে কোভিড-১৯ মহামারি যৌনকর্মীদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। কোনো উপার্জন ছাড়া তারা বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। যাদের মোবাইল ফোন আছে এবং ইন্টারনেট আছে তারা এখন যৌনকর্মকে মোবাইল ফোনে নিয়ে গেছেন। ভার্চুয়াল জগতে সারছেন সব। এর মাধ্যমে খদ্দেরকে আনন্দ দিচ্ছেন। এতে কিছুটা উপার্জন হচ্ছে তাদের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গজলাক্ষ্মী নামে সাবেক একজন শিক্ষাবিদ বলেন, অনেক খদ্দের যৌনকর্মীদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভিডিওকল করে। যদি তারা যৌনকর্মীকে পছন্দ করেন তখন দর কষাকষি করতে থাকেন। এক্ষেত্রে জিপে এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে যৌনকর্মীদের কাছে অর্থ পাঠিয়ে দেয় খদ্দেররা। আবার যৌনকর্মীর মোবাইলে যদি পর্যাপ্ত ব্যালেন্স বা অর্থ না থাকে, তাহলে তারাই রিচার্জ করে দেয়। এসব খদ্দেরের বেশির ভাগই পুরুষ, যারা করোনা মহামারির সময় নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছেন।
একজন যৌনকর্মী বলেন, অনলাইনে নানা রকম পর্নোগ্রাফি থাকা সত্ত্বেও মানুষ ভার্চুয়াল জগতে আসে। কারণ, শারীরিক সম্পর্ক মানেই তো শরীর সম্পর্কিত। কিন্তু ভার্চুয়াল জগতে মানুষ আসে। এর কারণ, এখানে নোংরা কথোপকথন করা যায়। এমন কি কারো সঙ্গে রোমান্টিক আলোচনা করা যায়। যদি কোনো যৌনকর্মীকে কোনো খদ্দের খুব পছন্দ করে বসেন, তাহলে তাকে ফি দেন বেশি। তারপরও তা নির্ভর করে ফোনকলে কত সময় তারা রয়েছেন তার ওপর নির্ভর করে।
সাউথ ইন্ডিয়ান এইডস একশন প্রোগ্রামের (এসআইএএপি) নির্বাহী পরিচালক শ্যামলা নটরাজ বলেন, ফোন বা ভার্চুয়াল যৌনতায় অর্থ কম পরিশোধ করা হয়। এক্ষেত্রে অনেক যৌনকর্মী দর কষাকষি করতে পারেন না। যেহেতু বহু এলাকায় নিষিদ্ধ পল্লী নেই, তাই যৌনকর্মীরা আত্মগোপন অবস্থায় থেকে এসব কাজ করেন। কিছু নারী বলেছেন, তারা এমনটা করেন। কারণ, তাদের নিজেদের বাড়ি নেই। তাদেরকে পার্টনারের সঙ্গে বা সন্তানদের সঙ্গে থাকতে হয়। তাই তাদের অনেকে ফোনে এমন সম্পর্ককে বেছে নেন। অন্যরা আয়ের বিকল্প পন্থা বের করার চেষ্টা করছেন।
কন্যাকুমারীতে নারীরা মুরগি পালন ও ডিম বিক্রি করতে পারেন। এতে একজন মানুষকে কমপক্ষে ৫০০০ রুপি বিনিয়োগ করতে হয়। তা থেকে দিনে ৮০ রুপির মতো আয় হতে পারে। কিন্তু এই অর্থ দিয়ে তাদের টিকে থাকা কঠিন। থানে’তে নারীরা ছোট ছোট খাবারের দোকান দিচ্ছেন। তবে হিজড়া সম্প্রদায়ের যৌনকর্মীরা অবলীলায় ফোন সেক্সের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। কারণ, তাদের কোনো বিধিনিষেধ নেই। নটরাজ বলেছেন, আমরা প্রায় চার বছর আগে একটি জরিপ করেছি। তাতে দেখা গেছে তামিলনাড়–তে কমপক্ষে ৯০ ভাগ হিজড়ার আছে স্মার্টফোন। অন্যদিকে নারী যৌনকর্মীদের মধ্যে শতকরা মাত্র ৩০ ভাগের কাছে আছে এমন ডিভাইস।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর