সংসারে খানিকটা সচ্ছলতা ফেরাতে আদরের সন্তানকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন বাবা-মা। দালালের খপ্পরে পড়ে জীবন বাজি রেখে দেশ ছেড়েছিলেন সন্তান। ইচ্ছে ছিল টাকা উপার্জন করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবেন। কিন্তু কে জানতো জীবিকায় গতি আনতে গিয়ে জীবন-ই হারাতে হতে পারে। প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় পেরিয়েছে। এখনো খোঁজ মিলেনি বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ফতেহপুর গ্রামের হারুনুর রশীদ ইমন (৩২) এর। তিনি আব্দুল খালিকের ছেলে। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন ইমন।
সেখানে প্রায় ৩ মাস থাকার পর সবশেষে পরিবারের ফোনে তিনি ম্যাসেজ পাঠান -‘আমি কিছুক্ষণ পর গেইমে ওঠবো।’ গেইম মানে নৌকা চড়া। এরপর থেকে আর খবর নেই তার। তবে কি তার জীবনের ‘গেইম’ ফুরিয়ে গেছে। তা জানে না কেউ। ইমনের ছোট ভাই হাসানুর রশীদ জানান, উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের আদম ব্যবসায়ী কামরুল হাসান প্রকাশ মিন্টু (৩৭) এর সাথে ইতালি পাঠানোর জন্য ১০ লাখ টাকায় চুক্তি হয় তাদের। লিবিয়ায় পৌঁছার পর পুরো টাকাই তুলে দেয়া হয় মিন্টুর হাতে। টাকা নিয়ে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর কথিত আয়োজনও করে আদম ব্যবসায়ী ও তার সহযোগীরা। এরপর থেকে ভাইয়ের আর খোঁজ নেই।
হাসানুর রশীদ বলেন, আমরা অনেকবার ভাইয়ের খোঁজে দালাল মিন্টুর বাড়িতে গেছি। কিন্তু কেউ তার সন্ধান দিতে পারেনি। বর্তমানে ওই দালাল গ্রীসে বসবাস করছে। কিন্তু তার পরিবার কিংবা গ্রামের লোকজন তার বিষয়ে কিছু জানে না বলে আমাদের জানিয়েছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কিন্তু থানা পুলিশ কিংবা ডায়েরি তো আমার ভাইকে এখনো উদ্ধার করে দিতে পারেনি। তিনি জানান, তার ভাইয়ের সাথে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ এবং আরো বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১০ জন যুবক ছিল। ইমনের মতো অপর যুবকদেরও খোঁজ নেই এতদিন থেকে।