× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নবাবগঞ্জে করোনার ‘হটস্পট’ বান্দুরা ও কলাকোপা ইউনিয়ন

করোনা আপডেট

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
২ জুন ২০২০, মঙ্গলবার

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় করোনাভাইরাসের হটস্পট হয়ে উঠেছে বান্দুরা ও কলাকোপা ইউনিয়ন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য মতে মঙ্গলবার পর্যন্ত নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বান্দুরা ইউনিয়নে ৫২ জন ও কলাকোপা ইউনিয়নে ৪১ জন । নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগতত্ত্ব) ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ইউনিয়নভিত্তিক তালিকায় দেখা যায়. বান্দুরা ইউনিয়নে ৫২ জন, কলাকোপা’য় ৪১ জন, নয়নশ্রীতে ১১ জন, আগলা’য় ১০ জন, বাহ্রা’য় ৮ জন, যন্ত্রাইলে ৭ জন, চূড়াইনে ৬ জন, বক্সনগরে ৪ জন, কৈলাইলে ৪ জন, গালিমপুরে ৩ জন, বারুয়াখালীতে ২ জন, শোল্লা, শিকারীপাড়া ও জয়কৃষ্ণপুরে ১ জন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া খারশুরে (সিরাজদিখান) ১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নেই হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নবাবগঞ্জে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত ৩১ মার্চ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের সৌদিপ্রবাসী এক ব্যক্তির শরীরে।
এরপর ৯ এপ্রিল নয়নশ্রী ইউনিয়নের ছোট তাশুল্ল্যা গ্রামে তাবলীগ জামাত ফেরত আরো একজনের করোনা শনাক্ত হয়। ১৩ এপ্রিল তাবলীগ জামাত ফেরত ১ জনের, ১৬ এপ্রিল ঢাকা ও গাজীপুর ফেরত ২ জনের, ২০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জ ফেরত ১ জনের, ২১ এপ্রিল ২ জনের, ২৫ এপ্রিল ২ জনের, ১০ মে ৩ জনের, ১১ মে ঢাকা ফেরত ৩ জনের, ১২ মে ৪ জনের, ১৩ মে বান্দুরা ইউনিয়নের এক মাছ বিক্রেতার, ১৭ মে ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ৩১ মার্চ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত নবাবগঞ্জে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪ জন। তবে ২১ মে উপজেলায় শিশু ও নারীসহ ২১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। যার মধ্যে বান্দুরা ইউনিয়নের নতুন বান্দুরার জেলেপাড়া ও বণিকপাড়ার ১৮জন ও বান্দুরা বাজারের ১ জন। বাকি দুইজন নয়নশ্রীর। উপজেলার মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ জন। ২২ মে বাগমারা ও দাউদপুরে আরো ২ জনের, ২৪ মে ৬ জনের (কলাকোপা’য় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩ জন, বান্দুরায় ২ জন এবং নয়নশ্রীতে ১ জন), ২৬ মে কৈলাইলের আপন দুই ভাইয়ের এবং ২৮ মে বান্দুরা, যন্ত্রাইল, জয়কৃষ্ণপুর, বাহ্রা ও চূড়াইনের ৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২৮ মে পর্যন্ত নবাবগঞ্জে করোনায় আক্রান্তে সংখ্যা ছিল ৬৩ জনের। ৩১ মে উপজেলায় একদিনেই ৮৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলায় মোট আক্রান্ত ১৫২ জন। ১৯ মে থেকে ৩০ শে মে এই ১২ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ১২৮ জন। এরমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে নতুন বান্দুরার গৌরাঙ্গ বনিক ও চূড়াইনের ভজন রাজবংশী নামে দুই জন। নবাবগঞ্জে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষ করে উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়ন ও বান্দুরা ইউনিয়ন হঠাৎ করে করোনার হটস্পট হয়ে উঠায় আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। জানা যায়, বান্দুরা ইউনিয়নের নতুন বান্দুরা জেলেপাড়া ও বণিকপাড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও তারা এখনো উদাসিন। তাদের উদাসিনতার কারনে সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। বান্দুরা ও কলাকোপা ইউনিয়নে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পিছনে ঈদের আগে বাগমারা ও বান্দুরা মার্কেট খুলে দেওয়াকে দায়ী করছেন বেশিরভাগ মানুষ। ঈদের আগে মার্কেট দুটোতে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউ সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করেনি। ফলে এই দুই মার্কেট পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আক্রান্তে হার বেড়ে গেছে। বান্দুরায় আক্রান্ত বেশিভাগই ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার। বান্দুরার একাধিক বাসিন্দারা জানান, নতুন বান্দুরা জেলেপাড়া ও বণিকপাড়া যে এতগুলো লোক করোনায় আক্রান্ত তাদের দেখে বুঝার উপায় নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে এবং প্রতিবেশিরা দিব্যি বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন কি প্রথমে আক্রান্ত হওয়া একাধিক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা ঈদে দোকান খোলা রেখেছিল। এখন শুনি ঐ দোকানদারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কিছু মানুষের উদাসিনতায় বান্দুরায় ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বান্দুরাসহ পুরা নবাবগঞ্জে যেন আর ভাইরাসটি ছড়াতে না পারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর