× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খুলনা সিটি করপোরেশন সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
৩ জুন ২০২০, বুধবার

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের মহেশ^রপাশা ক্যাথলিকপাড়া এলাকার দায়িত্বে থাকা নেত্রী (এসিএনএফ) পাপড়ি রায়ের বিরুদ্ধে সিডিসির সদস্যদের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ এবং তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুলনা মহানগরীতে অবস্থানরত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রকল্পের আওতায় করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় কর্মঝুঁকিতে পড়া সিডিসি সদস্যদের মাঝে নগদ ১৫শ’ করে টাকা ভোগীদের তালিকায় স্থান পেয়েছে মৃত ব্যক্তি, সিটি করপোরেশনের বাইরের জেলা ও বিভাগ এবং ইউনিয়নে বসবাসরত ব্যক্তিদের নাম। এছাড়াও দলনেত্রী পাপড়ি রায়ের মাসহ ১০ জন নিকটাত্মীয়ের নাম রয়েছে তালিকায়। হতদরিদ্র অসহায় এবং অসচ্ছল ব্যক্তিদের নাম বাদ দিয়ে সরকারি চাকরিজীবী, বহুতল ভবনের মালিকসহ বৃত্তশালীদের নামও রয়েছে। এই এলাকার দায়িত্বে থাকা দলনেত্রী পাপড়ি রায়ের বিরুদ্ধে এ সকল অনিয়মের পেছনে উৎকোচ ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। পাপড়ি রায়ের বিরুদ্ধে এ সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে লিখিত দিয়েছেন তালিকায় থাকা এবং তালিকা থেকে বঞ্চিত সিডিসি’র অসচ্ছল ও হতদরিদ্র সদস্যরা।
অভিযোগে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সিডিসি সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের মহেশ^রপাশা ক্যাথলিকপাড়ার ১৩৭ জন হদদরিদ্র ও অসচ্ছল সিডিসি’র পিজি সদস্যদের মাঝে বিকাশ রকেটের মাধ্যমে ১৫শ’ করে টাকা বিতরণ করা হয়। অভিযোগ আছে টাকা উত্তোলনের সময় পাপড়ি রায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকা করে বিভিন্ন অজুহাতে নিয়েছেন।
সিডিসির সদস্য লতাসহ একাধিক সদস্য জানান, আমাদের টাকা ফুলবাড়ীগেটের একটি বিকাশের রকেট একাউন্টে আসার পর পাপড়ি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকা করে নিয়েছে। বিষয়টি কাউকে জানালে বা টাকা না দিলে পরবর্তী সাহায্য বা তালিকা থেকে নাম কেটে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে।
এই ভয়ে সকলেই টাকা দিতে বাধ্য হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক সদস্যই টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
সিটি বাইরে ইউনিয়নে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা টাকা তোলার সময় দুই-তিনশ’ করে টাকা পাপড়িকে দিয়েছেন। মনখুশি ম-ল নামে একজন মৃত ব্যক্তির নামে টাকা তোলা হয়েছে। তিনি গত ২৩শে জানুয়ারি মারা গেছেন। তালিকার হান্না বিনা বাড়ই, আখি রায় থাকেন ঢাকায়, দিপালী বাড়ই, শিখা বাড়ই, বুলু বাড়ই, সাতক্ষীরা, বৃষ্টি লুচিয়া বাড়ই রূপসা এবং মৌসুমি মুখাট থাকেন  বৈকালীতে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের বাইরে ইউনিয়নে থাকেন লতা বিশ^াস, রিপা বিশ^াস, এলিজাবেদ ও ডলি  বৈরাগী। টাকা তুলেছেন দলনেত্রী পাপড়ি রায়ের মা বিনা বাড়ই, মামাতো বোন মোসুমী মুখাটি, সৃষ্টি লুচিয়া বাড়ই, মামী ভক্তি বাড়ই, শিখা বাড়ই মাসি, হান্না বিনা বাড়ই শাশুড়ি, আখি রায় ননদ, বুলু বাড়ই এবং দিপালী বাড়ই নিকটতম আত্মীয়। টাকা পেয়েছে মেরী প্রভা সরদার। যার মেয়ে জাপান থাকেন এবং ছেলে এনজিও কর্মকর্তা, সুসমা গমেজ দ্বিতলবাড়ী সরকারি চাকরিজীবী আন্না ঘোষ বিত্তশালী, স্বর্ণা তেরেজা ফলিয়ার ছেলে থাকে ফ্রান্স এবং অন্যজন ঢাকায় চাকরি করে। পাপড়ি রায়ের বিরুদ্ধে এলাকার হতদরিদ্র গরিব সদস্য অনেকেই অনুদানের অর্থ না পেলেও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ব্যক্তিসহ অনুদানের টাকা পাইয়ে দিয়ে তাদের কাছ থেকে কমিশন নেয়ার অভিযোগ আছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পাপড়ি রায় বলেন, আমি শুধু ক্যাথলিকপাড়া নয় ৫টি সিডিসি দায়িত্বে আছি। অর্থ প্রাপ্তদের তালিকা তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, খুলনা অফিস তালিকা করে। এখানে আমার কোনো হাত নেই। আমি অফিসের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি। মৃত ব্যক্তিদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ঢাকা-সাতক্ষীরাসহ অন্য এলাকায় থাকা ব্যক্তিদের অর্থ পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা প্রতি মাসে এসে সমিতির সঞ্জয় রেগুলার করে টাকা জমা দিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন ৬ বছর আগের জরিপ অনুযায়ী টাকা প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিত্তশালী বা বহুতল ভবনের মালিক এখন তারা হতে পারে। আর কারা কি পাবে তা অফিস থেকে নির্ধারণ করা হয়।
এ ব্যাপারে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট কমিটির (সিডিসি) টাউন ম্যানেজার (টিএম) মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, ইউনিয়নের বাইরে গিয়ে এই অর্থ দেয়ার কোনো সুযোগ  নেই। তালিকা তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের তালিকা অনলাইন সার্ভের আলোকে তৈরি। যারা সুবিধা পাওয়ার যোগ্য তাদের নামের তালিকা ঢাকা থেকে অটোজেনারেটের মাধ্যমে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের (২০) সুচক হিসাবে করা। যারা এ সূচকে পড়েছে শুধুমাত্র তারা সুবিধাভোগীদের মধ্যে পড়ছে। তবে ডাটা এনালাইসেসের কারণে কিছু ত্রুটিবিচ্চুতি হতে পারে। তবে মৃত ব্যক্তির নামে টাকা তোলা হলে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নেয়া এবং মৃত ব্যক্তির টাকা উত্তোলনের বিষয়সহ পাপড়ি বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ আমার বরাবর দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি সিডিসি’র টাউন ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর