× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

‘ট্রাম্প আমেরিকায় বিভক্তি সৃষ্টি করছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন, নেতৃত্বে ব্যর্থ’- মাত্তিস

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) জুন ৪, ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন তারই সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস মাত্তিস। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে নিজের কর্তৃত্বের বা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রকাশ্যে দেয়া এমন বক্তব্যের ঘটনা বিরল। এতে তিনি আরো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘পরিপক্ব নেতৃত্ব’ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকা- নিয়ে চলমান অসন্তোষ ট্রাম্প যেভাবে মোকাবিলা করছেন তাতে জেমস মাত্তিস ক্ষুব্ধ ও হতভম্ব। তার এমন বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, জেমস মাত্তিস একজন অতিমাত্রার জেনারেল।
তিনি তার পদ ছেড়ে গেছেন বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
২০১৮ সালে সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। এরপরেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ ত্যাগ করেন জেমস মাত্তিস। এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কড়া সমালোচনায় পড়ে। তখন থেকে এখন অবধি বেশির ভাগ সময়ই নীরব ছিলেন জেমস মাত্তিস। তবে বুধবার দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর তিনি তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তার এই সমালোচনার জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ধারাবাহিক টুইট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, জেমস মাত্তিসকে তিনি বরখাস্ত করেছেন। তিনি লিখেছেন, তিনি যে ধরনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং তার অন্যান্য যেসব কান্ড তা আমার পছন্দ হচ্ছিল না। তিনি চলে যাওয়াতে আমি খুশি।

মাত্তিস আসলে কি বলেছেন
দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনে জেমস মাত্তিস লিখেছেন, আমার জীবদ্দশায় ডনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টাই করেন নি। এমনকি তিনি এ জন্য কোনো উদ্যোগও নেন নি। পক্ষান্তরে তিনি আমাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। তার এই স্বেচ্ছাচারিতার পরিণতি আমরা তিন বছর ধরে প্রত্যক্ষ করছি। তিনটি বছর ধরে আমরা তার পরিকপক্বতাহীন নেতৃত্বের পরিণতি দেখছি।
এ মাসে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে পুলিশি নির্যাতনে নিহত হন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েড। তাতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এ নিয়েও কথা বলেছেন জেমস মাত্তিস। ফ্লয়েড হত্যাকা- নিয়ে পুলিশের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাউভিনকে দ্বিতীয় ডিগ্রির হত্যার অভিযোগে বুধবার অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৯ দিন ধরে এই বেক্ষাভ চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। বেশির ভাগ বিক্ষোভই শান্তিপূর্ণ। তবে কিছু বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। চলে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট। জবাবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসে ছোড়ে। লাঠিচার্জ করে। কমপক্ষে ২৫টি শহরে কারফিউ দেয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয় বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে। এই বিক্ষোভ নিয়ে জেমস মাত্তিস লিখেছেন, আমরা অবশ্যই স্বল্প সংখ্যক আইন ভঙ্গকারীদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবো না। এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের চেতনা হলো, আমরা আমাদের মূল্য নিয়ে বাঁচবো, একটি জাতি হিসেবে বাঁচবো।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ব্যবহার নিয়েও নিন্দা জানিয়েছেন অবরসরপ্রাপ্ত এই জেনারেল। তিনি লিখেছেন, নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করতে যেকোনো অবস্থায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের স্বপ্ন আমি কখনো দেখিনি। ওয়াশিংটন ডিসিতে আমরা যেমনটা প্রত্যক্ষ করেছি, সেনাবাহিনীর উপস্থিতি একটি সংঘাত সৃষ্টি করবে। এই সংঘাত হবে সেনাবাহিনী ও নাগরিক সমাজের মধ্যে।

ওই লেখায় জেমস মাত্তিস এ সপ্তাহের শুরুর দিকের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। যেখানে হোয়াইট হাউসের কাছে একটি পার্কে সমবেত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। এরপরই ঐতিহাসিক একটি চার্চে ফটো তোলার জন্য ট্রাম্প ওই পার্ক অতিক্রম করেছেন। ওই চার্চটি বিক্ষোভের সময় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় শীর্ষ ডেমোক্রেট নেতারা ও ধর্মীয় নেতারা ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, শুধু ওই চার্চে ছবি তোলার জন্য আগ্রাসীভাবে বিক্ষোভকারীদের টার্গেট করিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এই ঘটনায় উদ্ভট ফটো তোলার সুযোগ বলে সমালোচনা করেছেন জেমস মাত্তিস। তিনি বলেছেন, পার্ক থেকে বিক্ষোভকারীদের এভাবে সরিয়ে দেয়া নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বার বার প্রশ্ন করা হয়েছে, ওই বেক্ষাভকারীরা ছিলেন শান্তিপূর্ণ কিনা। এর জবাবে তিনি টুইট করেছেন, উপাসনার ঐতিহাসিক স্থানে আমার হেঁটে যাওয়া লোকজন পছন্দ করেছে। প্রেসিডেন্টের চার্চ পরিদর্শনের পক্ষে বুধবার জোরালো অবস্থান নিয়েছেন সাবেক প্রেস সেক্রেটারি সিন স্পাইসার। তিনি বলেছেন, ভালভাবে ওই সময় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ধর্মীয় নেতারা এটাকে পছন্দ করেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর