করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকিভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের যেকোনো সংকটকালীন সময়ের মতো করোনার এই কঠিন সময়েও সাংবাদিকরা তাদের অসাধারণ ভূমিকা এবং দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো করনীয় না থাকার পরও জনগনকে এ সম্পর্কে বাস্তব পরিস্থিতি অবহিত করে অতি গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব সাহসিকতার সাথে পালনকালে তারা তাদের নিজেদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি করেছেন। এরমধ্যেই ৬ জন সংবাদকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২৪৪ জন সংবাদকর্মী।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার এই সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন দেশের টেলিভিশন মাধ্যমটি বিকশিত হবার পেছনে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী একজন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ। দীর্ঘ ৬০ বছর তিনি রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি টেলিভিশনে কাজ করে অনেকক্ষেত্রেই টিভি অনুষ্ঠানের একটি মানদন্ড নির্ধারন করে দিয়েছিলেন।
তাঁর চলে যাওয়ার প্রভাব মিডিয়া দীর্ঘকাল অনুভব করবে। মোস্তফা কামাল সৈয়দ, দৈনিক সময়ের আলোর সিটি এডিটর হুমায়ুন কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিনিয়র সাংবাদিক সুমন মাহমুদ, দৈনিক ভোরের কাগজের ষ্টাফ রিপোর্টার এবং ক্যাবের সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসলাম রহমান, দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র সাব-এডিটর মাহমুদুল হাকিম অপু এবং দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফটো সাংবাদিক এম মিজানুর রহমান খান- তাদের সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি আমরা।
তারা বলেন, সাংবাদিকরা যেহেতু করোনার এই সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন, এ কারণে তাদের জন্য যথাযথ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনার এই সময়ে বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অনেক মিডিয়া হাউজ তার কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে। অবিলম্বে সব ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে, ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল করতে হবে এবং তাদের বেতন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয়, যেহেতু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় পর্যাপ্ত ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মামলার ঘটনাও ঘটেছে; সত্য প্রকাশের কারণে সাংবাদিক গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আমরা গ্রেপ্তারকৃত সব সাংবাদিকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি এবং ভবিৎষতে তাদের ওপর যে কোনো রকম হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে কোনো সংকটের সময়ে মুক্ত মত প্রকাশ বাধাগস্ত করলে সেটা সেই সংকটকে আরো ঘনীভূত করে এবং মানুষের জীবনের বিপর্যয় ঘটায়।