করোনার পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে কঠোর লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। একান্ত সাক্ষাৎকালে মানবজমিনকে তিনি এ কথা বলেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, আরো ৭-১০ দিন দেখতে হবে। করোনার পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। এখন প্রতিদিনই সংক্রমণের হার বাড়ছেই। মৃত্যুও হচ্ছে অনেক। ফলে উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই অবস্থায় সরকারের সামনে দুটি পথ।
একদিকে জীবন অন্যদিকে জীবিকা। জীবনও বাঁচাতে হবে। জীবিকা নিয়েও ভাবতে হবে। দুটির মধ্যেই ভারসাম্য জরুরি।
তিনি বলেন, প্রশাসনের দুর্বলতা আর জনগণের শৈথিল্যতা সবমিলিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দেশ। লকডাউন অনেকদিন চলছে। নিম্নআয়ের মানুষ আর পেরে উঠছে না। সামনে এখন প্রশ্ন জীবন না জীবিকা। ধীরে ধীরে সবমিলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকার দোকানপাট খুলে দিয়েছে, মসজিদ খুলে দিয়েছে, লকডাউন শিথিল করে দিয়েছে। আর এই শিথিলতার সুযোগে মানুষ রাস্তায় বের হয়ে পড়েছে। দলে দলে মানুষ রাস্তায় বের হয়েছে। ফুটপথ একেবারেই জমজমাট। ঈদের আগে সবাই মার্কেটে ভিড় করেছে। দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মানুষ। কোনো শারীরিক দূরত্ব কেউ মানেনি। কোনো মাস্কও নেই।
আগে গ্রামের অবস্থা ভালো ছিল। এখন ধীরে ধীরে গ্রামের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ঢাকার বাইরে আগের চেয়ে রোগী বেড়েছে। লাখ লাখ মানুষ গ্রামে গিয়ে এ রোগের বিস্তার ঘটিয়েছে। আবার এই মানুষগুলো ঢাকায় এসে নতুন করে তা ছড়াবে। এতে আমাদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বহুগুণ। অভিজ্ঞতা বলছে, মানুষ লকডাউন সঠিকভাবে মানছে না। পরিস্থিতি খারাপ হলে সরকারকে সিরিয়াস হতে হবে।
তিনি বলেন, দুই মাস ঘরে থাকায় সাধারণ মানুষদের একটু অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। লকডাউনও মানেনি অনেকে। এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ হলে কঠোর লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। আর তা পালনে মানুষকে বাধ্য করতে হবে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে স্বাস্থ্য বিধি মানার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেন তিনি। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে আরো ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় নিতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ভালোভাবে নজরদারি বাড়াতে হবে। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক আরো বলেন, এখন মহামারি পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এটা মানুষকে বুঝাতে হবে। প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। তাই মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।