× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অদম্য মেধাবী দুই বোন দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে গোল্ডেন জিপি-৫ পেয়েছে ঝর্ণা

বাংলারজমিন

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
৫ জুন ২০২০, শুক্রবার

অদম্য মেধাবী ঝর্ণা ও ফাহিমা দুই বোন। এবার এক সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে দু’জনই। দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে ঝর্ণা তো এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে অবাক করেছে। বাবা মা’সহ শিক্ষক মন্ডলীর মুখ উজ্জল করেছে ওই দুই বোন। পড়াশোনার খরচ ভালো মতো না জুটলেও ওই অদম্য মেধাবীদের সাফল্যে শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই বাধা হতে পারেনি। দুই বোনই স্বপ্ন দেখছে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের মতো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু ভাগ্যিস! দারিদ্রতাই এখন তাদের স্বপ্ন পূরণে মূল বাধা বলে মনে করছে মেধাবী দুই বোন। কেবলই লেখাপড়া খরচ যোগান দেয়াই নয়, তাদের অভাবী পরিবারের একমাত্র রোজগারী বাবাও অনেকটাই কর্মক্ষম হয়ে পড়ায় খেয়েপড়ে তাদের বেঁচে থাকাটাই এখন দায়।
এ অবস্থায় সমাজের হৃদয়বান মানুষের একটু সহযোগিতা পেলে দোয়ারাবাজার উপজেলার অদম্য মেধাবী দুই বোনের ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের পথ অনেকটাই সুগম হবে বলে মনে করি।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের কামারপট্রি এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী (৬৫) এর দুই মেয়ে ঝর্ণা বেগম ও ফাহিমা বেগম। এবার দোয়ারাবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এক সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। বড়ো মেয়ে ঝর্ণা বেগম ওই প্রতিষ্ঠান হতে একমাত্র গোল্ডেন জিপিএ-৫ এবং তাঁর অপর মেয়ে ফাহিমা বেগম জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে। উপজেলা সদরের ওই বিদ্যালয় হতে এবার ১৩৪ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তারা দুই বোনই সেরা ফলাফল অর্জন করে। তারা দারিদ্রতাকে জয় করে প্রতিষ্ঠানেরও সুনাম কুঁড়িয়েছে। এতে খুশি খোদ শিক্ষকরাও। কিন্তু পরিবারের দারিদ্রতার কারণে তাদের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এখন শংকা দেখা দিয়েছে।    
সরজমিন গিয়ে জানা যায়, দিনমজুর রমজান আলী (৬৫)। একজন খেটে খাওয়া মানুষ। শ্রমিকের কাজ করেই চলে তাঁর সংসার। কখনো খাদ্য গোদামে, কখনো কারো দোকানে, কখনো বা দিনমজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি এখন বয়সের ভারে নুজ¦্য। বড়ো পরিবারের একমাত্র রোজগারী কর্তা ব্যক্তিও বটে। কুড়ি বছর আগে সুরমার ভাঙ্গনে বিলীন হয় তাঁর সম্বল ভিটেমাটি। সহায় সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে যৌবনকালে ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যের বাসা-বাড়িতে থেকেছেন। সময়ের বিবর্তনে কোথাও ভিটেমাটি করতে না পারায় কয়েক বছর হলো তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের কামারপট্রি এলাকায় একটি ভাড়াটে বাসায় সপরিবারে বসবাস করছেন। তাঁর পরিবার সেই কবে থেকে ‘নুন আন্তে পান্তা ফুরানোর অবস্থা।’ তবুও থেমে নেই তাঁর অদম্য ইচ্ছা। স্বামী স্ত্রী দুজনই দিনমজুরী করে এবং অন্যেদের  সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে লেখাপড়া করাচ্ছেন সন্তানদের।
মেধাবী ঝর্ণা ও ফাহিমা কান্নায় ভেঙ্গেপড়ে জানায়, আমাদের বাবা মায়ের প্রচেষ্ঠা ও নিজেদের অদম্য ইচ্ছের কারণেই ভাল ফলাফল অর্জন করেছি। তারা খেয়ে না খেয়ে আমাদের পড়াশোনা করিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র রোজগারী বাবার এখন অনেক বয়স হয়েছে। পড়ালেখার খরচ যোগান দেয়া তো দূরের কথা তিনবেলা খাওয়ানোটাই কঠিন হবে। আমরা উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চাই এবং সমাজের অন্যদের মতোই বাঁচতে চাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর