রংপুরের বদরগঞ্জে সরকারি খাদ্যগুদামে ১৫ দিন ধরে ধান ক্রয় অভিযান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে কৃষকেরা গুদামে ধান দিতে পারছেননা। ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
বদরগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২০ মে ধান ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। ওইদিনেই একজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এক মেট্রিকটন ধান ক্রয় করা হয়েছে। তখন থেকে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে আর ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়নি।’
খাদ্যগুদাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ২৬ টাকা কেজি দরে তিন হাজার ৬৬ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করা হবে। ক্রয় অভিযান চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। উপজেলা কৃষি কর্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের ফলন বাম্পার হয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পুরোদমে ধান কাটামাড়াই চলছে।গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ উপজেলায় ৫০ ভাগ জমির ধান কাটা মাড়াই হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা কৃষকের তালিকা এক মাস আগেই খাদ্য অফিসে পাঠিয়েছি। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বাজারে ধানের দাম মোটামুটি ভালো। শুরু থেকে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় অভিযান অব্যাহত থাকলে কৃষকেরা আরো বেশি লাভবান হতেন বলে তিনি জানান।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বুজরুক হাজীপুর এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘হামরা ঋণ করে ধান চাষ করেছি। গত সপ্তাহে ধান কাটামাড়াই করেছি। খাদ্যগুদাম ধান না নেওয়ায় ১৯ টাকা কেজি দরে বাজারোত ধান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেছি। তার প্রশ্ন, কৃষকের ধান শেষ হলে কি সরকারি গুদামে ধান ক্রয় শুরু হবে?।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ছায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘একজন বড় কৃষকের ধান নিয়ে শুধু মাত্র উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে ধান বরাদ্দের চেয়ে কৃষকের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে ধান ক্রয় করা হবে। কিন্ত এ উপজেলায় ইউএনও নতুন এসেছেন। তিনি সময় দিতে না পারায় কৃষকের লটারি হচ্ছে না। এ কারণে ১৫দিন ধরে ধান ক্রয় অভিযান আপাতত বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, আমি গত ২৮ মে এ উপজেলায় যোগদান করেছি। লটারির জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রক দু’দিন আমার কাছে এসেছিলেন লটারির দিন উপস্থিত থাকার কথা বলতে। কিন্তু আমার সময় হয়নি। তাকে আগামী রোববার লটারি করতে বলেছি।’