ফেনীর ফুলগাজীতে সালমা আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূকে ‘যৌতুকের জন্য’ হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে নিহতের স্বজনরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্ধুয়া হাজী স্টোর ভূঞাঁ বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সালমা উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের ভুঞা বাড়ীর সিএনজি অটোরিক্সা চালক নজরুল ইসলাম শামীমের স্ত্রী ও ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের বৈরাগপুরের আবু তালেবের মেয়ে।
গৃহবধূর বাবা আবু তালেব বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে স্বামী, শাশুড়ি, দেবরসহ চার জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামীসহ শশুর বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে।
নিহতের বাবা আবু তালেব জানান, ‘৫ মাস পূর্বে জানুয়ারি মাসে সালমার সাথে একই উপজেলার আনন্দপুরের ভুঞাবাড়ীর আবদুর শুক্কুরের ছেলে সিএনজি অটোরিক্সা চালক নজরুল ইসলাম শামীমের সাথে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই দুই লাখ যৌতুকের জন্য সালামাকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিল তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দরিদ্র পরিবার হওয়ায় এক সাথে এত টাকা দেওয়ার সামর্থ ছিলো না। তবুও মেয়ের সুখের জন্য বিভিন্ন জন থেকে ধার করে ধাপে ধাপে প্রায় এক লাখ টাকা দিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবারও ফ্রীজের কিস্তি পরিশোধের জন্য ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে দেয়া হয়।
তাতেও তাদের মন গলেনি।’
তিনি আরো জানান, সালমার কাছে তার স্বামী আরো এক লাখ টাকা চাইলে সালমা তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের মা খুশি বেগম জানান, ‘বিয়ের পর থেকেই তারা আমাদের পরিবারের কাছে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ দাবি করে আসছে। আমাদের দেবার সামর্থ্য না থাকলেও মেয়ের শান্তির জন্য তাদের অনেক টাকা দিয়েছি।’
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কুতুব উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘরের মেঝে থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। লাশ উদ্ধারের সময় শশুর পক্ষের লোকজন বাড়িতে উপস্থিত ছিলো না।
ওসি আরো জানায়, প্রাথমিক তদন্তে নিহতের গলায় শ্বাসরোধের আলামত মিলেছে। তবে এটি আত্মহত্যা না শ্বাসরোধে হত্যা সেটি ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে মেয়ের স্বামী নজরুল ইসলাম, শ্বাশুড়ী মায়া আক্তার, দেবর কাউসার, শাকিল সহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।