× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুইডেনে প্রথম কোনো রাষ্ট্রদূতের বিচার হচ্ছে

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) জুন ৬, ২০২০, শনিবার, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

সুইডেনের আধুনিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাবেক একজন রাষ্ট্রদূতের বিচার হচ্ছে। এতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার জেল হতে পারে। ওই রাষ্ট্রদূতের নাম আনা লিন্ডস্টেডট। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি চীনা বংশোদ্ভূত একজন সুইডিশ নাগরিক গুই মিনহাইকে মুক্ত করতে বিদেশী শক্তির সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তবে এই আলোচনা করার জন্য তিনি ছিলেন আনঅথরাইজড বা অনুমোদনহীন। ফলে তিনি দায়মুক্তি পাচ্ছেন না। তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হচ্ছে। বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে তিনি নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন।
ওদিকে এ ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য বিদেশের কাছে সরবরাহ করার অভিযোগে এরই মধ্যে চীন জেল দিয়েছে হংকংয়ের ওই বই বিক্রেতা গুই মিনহাইকে। প্রসিকিউটররা বলছেন, মিস আনা লিন্ডস্টেডট চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। তিনি ওই নাগরিককে মুক্ত করার জন্য সমঝোতার আয়োজন করে সুইডেনের পররাষ্ট্রনীতিকে লঙ্ঘন করেছেন। তবে আনা লিন্ডস্টেডটের আইনজীবী স্টকহোমের আদালতে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

কি করেছেন আনা লিন্ডস্টেডট
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে চীনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আনা লিন্ডস্টেডট। অভিযোগ ওঠে যে, স্টকহোমে শেরাটন হোটেলে গুই মিনহাইয়ের মেয়ে অ্যানজেলা গুই এবং চীনের দু’জন ব্যবসায়ী, যাদের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভাল সম্পর্ক আছে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এমন বৈঠকে সুইডেনের অনুমোদন ছিল না আনা লিন্ডস্টেডটের। এর আগে থেকেই তার পিতার মুক্তির জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন অ্যানজেলা গুই। তিনি বলেছেন, তাকে ওই হোটেলের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মিস আনা লিন্ডস্টেডট। তিনি তাকে বলেছিলেন, কিছু ব্যবসায়ী আছেন যারা তার পিতাকে মুক্ত করার বিষয়ে সহায়তা করতে পারেন। ‘এ জন্য তিনি আমাকে স্টকহোমের ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান’।
তিনি অভিযোগ করেন, দু’দিন হয় ওই বৈঠক। এর মধ্যে একজন ব্যবসায়ী অ্যানজেলা গুইকে এটা মেনে নিতে চাপ দেন যে, যদি তিনি তার পিতার বন্দিত্ব নিয়ে প্রচারণা বন্ধ করেন, তাহলে তিনি দু’চার বছরের জেল শেষে মুক্তি পাবেন। অ্যানজেলা গুই বলেন, এই পরিকল্পনা সমর্থন করেন রাষ্ট্রদূত আনা লিন্ডস্টেডট। মিস আনা তাকে সতর্ক করেন এই বলে যে, যদি তিনি প্রচারণা অব্যাহত রাখেন, তাহলে সুইডেনকে শাস্তি দিতে পারে চীন।

কি বলছেন আনা লিন্ডস্টেডট
কোনো অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন আনা লিন্ডস্টেডট। তিনি এখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেন নি। তিনি জানিয়েছেন একজন রাষ্ট্রদূতের এমন ক্ষমতার যথার্থতা আছে এটা জানিয়ে ওই বৈঠক সম্পর্কে স্টকহোমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি ইমেইল পাঠিয়েছেন। ওই দুই ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা- এমন অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছেন আনা লিন্ডস্টেডট। কিন্তু প্রসিকিউটররা বলছেন, ওই দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে একজন চীনের রাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্বকারী। মামলা প্রত্যাহারের বার্তা জানিয়ে আনা লিন্ডস্টেডটকে চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু সাবেক এই রাষ্ট্রদূত তা হাতে পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। ওদিকে তাকে সমর্থন করেছেন সাবেক ২১ জন রাষ্ট্রদূত। তারা যুক্তি দিয়েছেন একজন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ওই রকম বৈঠক আহ্বানের এক্তিয়ার আছে আনা লিন্ডস্টেডটের। এ ছাড়া এ ঘটনায় সুইডিশ পুলিশের সম্পৃক্ততার সমালোচনা করেছেন তারা।

কে এই গুই মিনহাই
গুই মিনহাই হলেন সুইডিশ নাগরিক। তিনি হংকংয়ে বই বিক্রি করেন। ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডে অবকাশ যাপনে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি। পরে ২০০৩ সালে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর স্বীকারোক্তি দিতে দেখা যায় তাকে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। চীনা নেতাদের সমালোচনা করার জন্য আরো চারজন হংকংয়ের বই বিক্রেতা প্রায় একই সময়ে নিখোঁজ হন। পরে তাদেরকে চীনে পুলিশ হেফাজতে পাওয়া যায়। ২০১৭ সালে মুক্তি পান গুই মিনহাই। কিন্তু তখন বেইজিংগামী একটি ট্রেনে সুইডিশ কূটনীতিকদের সঙ্গে তাকে পাওয়া যাওয়ায় আটক করা হয়। বিদেশীদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করার অভিযোগে তাকে গত ফেব্রুয়ারিতে আবার জেল দেয়া হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর