দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৬৩৫ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৮৪৬ এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ২৬জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, ৫০টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯০৯টি। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৪৮৬টি। পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে ২ হাজার ৬৩৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। তিনি ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫২১ জন সুস্থ হয়েছেন।
এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৩২৫ জন। নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, নারী ৭ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছে ২০ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন। বয়স বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে ১০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৫ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ৯ জন, মৃত অবস্থায় হাসপাতালে গেছেন ১ জন।
২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩১৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৭ হাজার ১৬২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৫ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬টি।
ডা. নাসিমা সুলতানা আরো বলেন, ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ২২২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৯২৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ২৯৮ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
উল্লেখ্য, গত ৮ই মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। শুরুর দিকে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৮৩ জন। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ লাখ ৬১ হাজার ৭২৭ জন । সুস্থ হয়েছেন ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৬৬ জন।