× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কামরানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার

প্রথম পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৭ জুন ২০২০, রবিবার

দুশ্চিন্তা বাড়ছে সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে নিয়ে। করোনায় আক্রান্ত খবর শোনার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। বেড়েছে শ্বাসকষ্টও। এ কারণে রাত থেকেই ছড়ারপাড়স্থ বাসাতেই তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। সকালের দিকে কয়েকবার বমি হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেটের আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। চেকআপের পর চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কেবিনে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র মানবজমিনকে জানিয়েছেন, বদরউদ্দিন আহমদ কামরান দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
তার শ্বাসকষ্টও রয়েছে। এ কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এখন শারীরিক অবস্থা বেশি গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য তিনি। দীর্ঘ সময় সিলেট পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সিলেটের মানুষের প্রিয়জন তিনি। কয়েক মাস আগে পারিবারিক কাজে গিয়েছিলেন লন্ডনে। করোনা পরিস্থিতির প্রাক্কালে মার্চ মাসের মাঝামাঝি তিনি সিলেট ফিরেন। দেশে ফিরে তিনি ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এর মধ্যে শুরু হয় করোনাকাল। ঘরবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। লকডাউন শুরু হয় দেশজুড়ে। কোয়ারেন্টিন মুক্ত হয়ে কামরান সক্রিয় হলেন মানবসেবায়। প্রথমে নিজ উদ্যোগেই মানুষের সেবায় কাজ শুরু করেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেন। কখনো নিজ বাসায়, আবার কখনো খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে যান বিভিন্ন এলাকায়। গোটা রমজান মাসই তিনি মানুষের কাছাকাছি থেকে অভুক্তদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ডাকে সাড়া দিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কাজে অংশ নেন। ফলে ব্যস্ত সময় কাটান কামরান। একই সঙ্গে ব্যস্ত ছিলেন তার স্ত্রী আসমা কামরানও। বাসায় থাকলেও আসমা রমজান মাসজুড়ে ইফতারি তৈরি করেছেন। আর এসব ইফতার সামগ্রী সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে প্রতিদিনই পৌঁছে দিতেন ছেলে আরমান আহমদ শিপলু। ঈদের দিন আরো ব্যস্ত ছিলেন কামরান ও স্ত্রী আসমা। বাসায় তৈরি করা ঈদের খাদ্য সামগ্রী তারা বিতরণ করেছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। পারিবারিক সূত্র জানায়, ঈদের দিন বিকাল থেকেই অসুস্থতা অনুভব করেন কামরান ও তার স্ত্রী আসমা কামরান। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় দু’জনের। এ কারণে বড় ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু তাদের দু’জনের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা দেন। ২৭শে রমজান আসে রিপোর্ট। কামরানের করোনা নেগেটিভ। তবে আসমা কামরানের পজিটিভ। এতে করে পরিবারের মধ্যে দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওই দিনই আসমা কামরানকে বাসার একটি ঘরে আইসোলেশনে রাখা হয়। আসমা কামরানের করোনা পজিটিভে চিন্তিত হয়ে পড়েন কামরান। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সব সময় ব্যস্ত থাকেন। এই সময় পরিবারের স্বজনসহ সবার দিকে খোঁজখবর রাখছিলেন। ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু জানান, তার মা আসমা কামরানের শরীরে জ্বর ছিল। এক সপ্তাহ পর সে জ্বর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এরপর তিনি সুস্থ রয়েছেন। আইসোলেটেড অবস্থায় বাসাতে রয়েছেন। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে নতুন করে সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন তার পিতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। তিনিও বাসাতে আইসোলেটেড অবস্থায় রয়েছেন। এ কারণে গত বৃহস্পতিবার আবার কামরানের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা দেয়া হয়। শুক্রবার রাতের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসায় মানুষের যাতায়াত সব সময়। আব্বা, আম্মু দু’জনই সব সময় মানুষ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নানা কাজে মানুষ আসেন। সুতরাং কখনোই তাদের দু’জনকে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।’ রমজানের পুরো সময়ই তারা দু’জন ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান শিপলু। এদিকে করোনা পজিটিভ আসার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন কামরান। তার শরীরের তাপমাত্রা রাতে বেড়ে যায়। ছেলে ডা. শিপলু সব সময় বাবার তদারকি করেন ও খোঁজখবর নেন। রাতে বাসাতেই তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে। এদিকে সকাল থেকেই আরো অসুস্থ বোধ করেন কামরান। কয়েক দফা বমিও করেন। এছাড়া তাপমাত্রা উঠা-নামা করছিল। এজন্য সকালে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল থেকে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়। সেই গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে চেকআপের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তার শারীরিক দুর্বলতা থাকার কারণে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। শ্বাসকষ্টও রয়েছে। এখন হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার বুকের এক্স-রে করা হয়েছে বলে জানান ওই চিকিৎসক। এদিকে কামরানের শারীরিক অবস্থায় চিন্তিত স্বজনরা। রাতেই পরিবারের স্বজনরা আলোচনা করেছিলেন ঢাকায় নিয়ে যেতে। সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সিলেটেই ভর্তি করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন কামরানের পারিবারিক ঘনিষ্ঠজনরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর