× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রেড জোনে লকডাউন

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৭ জুন ২০২০, রবিবার

করোনা সংক্রমণ রোধে রাজধানীর রেড জোনগুলো লকডাউন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুরুতে ওয়ারি ও রাজাবাজার এলাকা পরীক্ষামূলক লকডাউন করার প্রস্তুতির তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। রাজাবাজার এলাকায় গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়।
টানা দুই মাসেরও বেশি সরকারি ছুটির পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার কর্মসূচি চললেও করোনা সংক্রমণ থামানো যায়নি। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে কঠোর লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এমন পরামর্শের ভিত্তিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে সারা দেশে রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেড জোনগুলোকে প্রথমে লকডাউনের মধ্যে আনা হচ্ছে। এর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুক্রবার দেশের প্রথম রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত কক্সবাজার শহরের ১০ টি ওয়ার্ড লকডাউন করা হয়।
এসব ওয়ার্ডে গতকাল থেকেই প্রশাসন কড়া নজরদারি শুরু করেছে। লকডাউন করে দেয়া এলাকায় কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। প্রয়োজনীয় পণ্য সহজে  এলাকায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রথম লকডাউন করা কক্সবাজার পৌর এলাকায় সপ্তাহে দুই দিন ব্যাংক খোলা রাখা হবে প্রয়োজনীয় লেনদেনের জন্য। অন্যদিকে কাঁচাবাজার ও দোকান খোলা রাখা হবে সপ্তাহে দুই দিন। এছাড়া জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কোনো এলাকায় প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ জন হলে সেই জায়গা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে অবরুদ্ধ করা হবে। চলতি সপ্তাহেই  জোন ভাগের কাজ শেষের পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। এর আগে পাইলটিং হিসেবে কিছু এলাকা লকডাউন করা হবে। এসব এলাকায় প্রয়োজনে লোকজনকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, জোন ভাগের খসড়া সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য ও আইসিটি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ আরো কয়েকটি সরকারি সংস্থা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।
জোন ভাগ হবে যেভাবে: কোনো এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি লাখে অন্তত ৩০-৪০ জন করোনা আক্রান্ত হলেই রেড জোন ঘোষণা করা হবে। রোগীর সংখ্যা এর কম থাকলে তা ইয়েলো জোন হিসেবে বিবেচিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে ইয়েলো জোনকেও লকডাউনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে রেড জোনের চেয়ে ইয়োলো জোনে কড়াকড়ি কম থাকবে। জোন ভাগের ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্তদের ফোন নম্বরের অবস্থান বিশেষ কাজে আসবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এর (এমআইএস) পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান জানান, একটি ওয়ার্ড বা প্রয়োজনে তারও ছোট এলাকা লকডাউন হতে পারে।
কারা লকডাউন ঘোষণা করবে: গত ১লা জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজটি নতুন এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। আইসিটি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞরা মিলে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করছেন। লকডাউন  ঘোষণার কাজ সংশ্লিষ্ট এই তিন মন্ত্রণালয়ের যে কেউ ঘোষণা করতে পারে। সারা দেশে এই প্রক্রিয়া শুরু হলে স্থানীয় প্রশাসনও লকডাউন ঘোষণা করতে পারবে।
যেসব কড়াকড়ি থাকবে: লকডাউন থাকা এলাকার জনসাধারণের প্রবেশ ও বহির্গমন বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। চিহ্নিত এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করা হবে। এছাড়া সাধারণ মানুষ যাতে সহজে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।
এসব এলাকায় করোনা আক্রান্তদের বাসায় আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেয়া হবে। তাদের আত্মীয়-স্বজনদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কারও অবস্থা খারাপ হলে তাদের হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও করোনা সংক্রান্ত মিডিয?া সেলের আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান খান মানবজমিনকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন এলাকা রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করার জন্য অ্যাপ করা হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা শহরের কোন একটি ছোট এলাকা বা ওয়ার্ডে রেড জোনে লকডাউনের মাধ্যমে পাইলটিং শুরু হবে। পাইলটিংয়ের ফলাফল দেখে সারা দেশে জোনিং করে আগামী সপ্তাহ কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, যে এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হবে, সেই এলাকা সম্পূর্ণ ব্লক রাখা হবে।  সেই এলাকায় কেউ ঢুকবেও না, কেউ বেরও হবে না। ওই এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিসের দরকার হবে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ই মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। এরপর সরকার ২৬শে মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। দীর্ঘ ৬৬ দিনের এই ছুটি শেষে আবারও সরকারি-আধা সরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়েছে। চালু হয়েছে ট্রেন, লঞ্চসহ গণপরিবহন। উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেই সবকিছু খুলে দেয়ায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। এই অবস্থায় কঠোর লকডাউন বা কারফিউ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর