× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড জালিয়াতির হোতারা র‌্যাবের জালে

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
৮ জুন ২০২০, সোমবার

 মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেভিড, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি চক্রের ৯ হোতাসহ ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। শনিবার রাত ১টা থেকে রবিববার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা ও ফরিদপুর ভাঙ্গা এলাকায় র‌্যাব-৮ ও ২ এর দুটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে। তারা হলেন- নাজমুল জমাদ্দার (১৯), হাসান মীর, (১৮), মো. ইব্রাহিম মীর (১৮), তৌহিদ হাওলাদার (২৩), মোহন শিকদার (৩০), পারভেজ মীর (১৮), সোহেল মোল্যা (২৬), মো. দেলায়ার হোসেন (৩৫), সৈয়দ হাওলাদার (২০), মো. রাকিব হোসেন (২৪), মোহাম্মদ আলী মিয়া (২৬), মো. পলাশ তালুকদার (৩৪), মো. ইমন (২৫)। এসময় তাদের কাছে থেকে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬২ টাকা, ৩১টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ, ২টি ট্যাব, ১২০টি সীম, ১টি রাউটার ও ১টি টিভি কার্ড উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে কেউ হান্টার টিম, স্পুফিং টিম, ফেইক কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও ওয়াচম্যান দলে কাজ করে।  গতকাল কাওরান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে.কর্ণেল সারওয়ার বিন কাশেম।
সারওয়ার বলেন, করোনাকালীন সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন মানি ট্রান্সফার লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তবে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল কিছু চক্র। প্রায় প্রতিদিন অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন মানি ট্রান্সফার ও ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছেন অভিযোগ আসছিল আমাদের কাছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আমরা গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে অভিযোগগুলোর ছায়াতদন্ত শুরু করি। আর তদন্তের এক পর্যায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে একটি চক্রের সন্ধান পাই আমরা। এ চক্রটির একজন মাস্টারমাইন্ড রয়েছেন। তার অধীনে ৩০-৩৫ জন লোক সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। হান্টার, স্পুফিং, ফেইক কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও ওয়াচম্যান এ পাঁচটি গ্রুপে ভাগ হয়েই মূলত কাজ করে থাকেন তারা। গ্রেপ্তারকৃত এ চক্রটির সবাই ফরিদপুর ভাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা। করোনাকালীন সময়ে দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ও পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন দেয়া হচ্ছে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। প্রতারক চক্রটি এ সুযোগেই পেশাজীবি, ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও পোশাক কারখানা কর্মীদের টার্গেট করে প্রতারণা করছিল। ভুলে টাকা চলে যাওয়া, লটারী জেতা, বৃত্তি পাওয়া, একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডধারীদের জালিয়াত করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। তবে এ ধরণের প্রতারণা থেকে একটু হলেও রক্ষা পেতে সাধারণ নাগরীকদের একটি বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরী। স্পুফিংয়ের মাধ্যমে ফোন আসলে সাধারণত নাম্বারের আগে প্লাস (+) সাইন থাকে। আসল কাস্টমার কেয়ার থেকে করলে প্লাস থাকে না।
তিনি আরো বলেন, কাস্টমার কেয়ারের প্রধানই মূলত মাস্টার মাইন্ড। একজন মাস্টার মাইন্ড বা মূল হোতা হান্টার টিমের কাছ থেকে গ্রাহকদের নাম্বার সংগ্রহ করে স্পুফিং টিমকে দেয়। স্পুফিং টীম তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করে কাস্টমার কেয়ারগুলোর নাম্বার-সংস্থার নাম স্পুফিং করে থাকে। ফেইক কাস্টমার কেয়ারের সদস্যরা গ্রাহককে প্রতারিত করে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে বা অনলাইনে কেনা কাটা করে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার ক্ষেত্রে প্রতারক চক্র থেকে প্রথমে নির্ধারিত গ্রাহককে এসএমএস বা কল দেয়া হলে স্পুফিংয়ের কারনে সংশ্লিষ্ট কাস্টমার কেয়ারের নাম্বরটিই ভেসে উঠে। তবে উল্লেখ্য যে, যদি কাস্টমার কেয়ার নাম্বারটি ১৭২৪১ হয়, তবে স্পুফিং বা ক্লোনিং নাম্বারটি প্রদর্শিত হবে +১৭২৪১; পার্থক্য শুধু প্লাস চিহ্নের। ফলশ্রুতিতে প্রতারকরা ব্যাংকের বিভিন্ন গ্রাহকদের বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করে ফাঁদে ফেলে। এই চক্রটি কখনো কখনো লটারির জেতার কথা বলে প্রতারণা করে থাকে। সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, আর পুরো প্রতারণা চক্রের সঙ্গে সাধারণত ছোটখাটো ব্যবসা বা দোকান চালানোর আড়ালে সম্পৃক্ত থাকে একদল ওয়াচম্যান। এদের কাজ হচ্ছে এলাকার কোন আগন্তুক বা সন্দেহজনক কাউকে চলাফেরা করতে দেখলে তৎক্ষনাৎ হোতাকে জানিয়ে দেয়া। ওয়াচম্যানরা ঘন্টা ভিত্তিক বা চুক্তি ভিত্তিক টাকা পেয়ে থাকে। গ্রেপ্তার ৯ জনই নাজমলু জমাদ্দার, হাসান মীর, মো. ইব্রাহিম মীর, তৌহিদ হাওলাদার, মোহন শিকদার, পারভেজ মীর, সোহেল মোল্যা মো. দেলায়ার হোসেন ও সৈয়দ হাওলাদার মূল হোতা ও মাস্টার মাইন্ড। তবে তাদেরও একজন মাস্টারমাইন্ড আছে। গ্রেপ্তার ও তদন্তের স্বার্থে তার নাম এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর