খুলনা মহানগরীর রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ও বাগেরহাট ম্যাটসের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুর রকিব খান হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার হওয়ায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতি স্থগিতের এ ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন, (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘রোগীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ডা. রকিব হত্যা মামলার অন্যান্য আসামিকেও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে আলোচনাক্রমে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ এ সময় অন্যান্য চিকিৎসক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিএমএর আহ্বানে বুধবার বিকেল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন খুলনার চিকিৎসকরা।
এদিকে, বুধবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে ডা. রকিব হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি জমির, আবুল আলী, গোলাম মোস্তফা ও খাদিজাকে গাজীপুরের টঙ্গী ও খুলনার রূপসা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রাতে আবদুর রহিম নামের আরো একজনকে গ্রেপ্তার করে তারা। পরে তাকে ডা. রকিব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এনিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিন জন গ্রেপ্তার হলো। গ্রেপ্তারকৃত জমির মৃত রোগী শিউলী বেগমের ভাই, আর আবুল আলী শিউলির স্বামী, খাদিজা শিউলির ভাবী ও গোলাম মোস্তফা শিউলির চাচা। উল্লেখ্য, নগরীর মোহাম্মদনগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে ১৪ই জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেদিন বিকেল ৫টায় তার অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ই জুন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানেও রোগী রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। নেওয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান। এই ঘটনায় নিহতের স্বজনরা ১৫ই জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ক্লিনিকে গিয়ে ডা. রকিবকে লাথি-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে ১৬ই জুন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।