লাদাখে রক্তাক্ত সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর ভারতে চীনা পণ্য বয়কটের দাবি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। এমনই এক আবহে এ বার বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে। অর্থনৈতিক প্রত্যাহারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে চীনের একটি সংস্থার সঙ্গে ৪৭১ কোটি রুপির চুক্তি বাতিল করেছে ভারতীয় রেলওয়ে। অবশ্য চুক্তি বাতিলের কারণ হিসেবে সরকারিভাবে অন্য যুক্তি দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ অপ্রত্যাশিত ধীর গতিতে এগোনোয় এই পদক্ষেপ বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর-এর কানপুর থেকে দিনদয়াল উপাধ্যায় ( পুরনো মুঘলসরাই) স্টেশন পর্যন্ত ৪১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশে সিগনালিং ও টেলিকম ব্যবস্থা তৈরির বরাত পেয়েছিল চিনের একটি সংস্থা। ২০১৬ সালের জুন মাসে ভারতীয় রেলের আওতাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া থেকে ৪৭১ কোটি টাকার এই বরাত পেয়েছিল তারা। কিন্তু গত ৪ বছরে অভিযোগ, প্রকল্পের মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করতে পেরেছে এই চীনা সংস্থাটি।
ওই সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার বা বিশেষজ্ঞরা একেবারেই কাজের এলাকায় হাজির থাকেন না। এই কাজের জন্য যে সমস্ত সরঞ্জাম প্রয়োজন, তা নিয়েও কোনও হেলদোল নেই চীনা সংস্থাটির। যার ফলে প্রকল্পের কাজ ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চুক্তি অনুসারে পরিকল্পনা মাফিক কাজ না এগোনোয় চীনা সংস্থাকে দেয়া বরাত বাতিল করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএল, এমটিএনএল এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে চীনের সঙ্গে চুক্তি ও চীনা পণ্য বয়কটের নির্দেশ দিয়েছে টেলিকম মন্ত্রক। টেলিকম মন্ত্রকের এই নির্দেশের ফলে এই সংক্রান্ত টেন্ডারে চীনা সংস্থার প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহারের উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এদিকে, চীন থেকে আমদানি করা ১৬০ থেকে ২০০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির কথা চিন্তাভাবনা করছে ভারত সরকার। এ ছাড়া শুল্ক না বাড়ানো হলেও আরও প্রায় ১০০টি পণ্যে এদেশে বিক্রির উপরে কড়াকড়ি করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এই সমস্ত পণ্যের ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। অথবা গুণগত মান নিয়ে কড়াকড়ি বাড়াতে পারে সরকার।