× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুন্দরী পরীর ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ

এক্সক্লুসিভ

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
২৭ জুন ২০২০, শনিবার

শুধু নাম নয়, তার চেহারাও পরীর মতো। কখনো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কখনো মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আবার কখনো সমাজসেবা কর্মকর্তা সাজেন। মোহনীয় চাহনি দিয়ে কখনো পুরুষ, কখনো গ্রামের অবলা দরিদ্র নারী ও কিশোরীদের ফাঁদে ফেলেন। এরপর নিজের ইচ্ছা মাফিক আদায় করেন অর্থ। এটাই লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের প্রতারক পরী বেগমের পেশা। আর উঠতি বয়সের যুবক, চাকরিজীবী, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ সবাইকে ফেসবুকে চ্যাটিং বা মোবাইল ফোনে কথা বলে ট্র্যাপে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অন্যদিকে ফোনে কথা বলে রুমমেট করার ফাঁদে ফেলে শিকার ধরতো ওই সুন্দরী পরী। তার মন ভোলানো কথায় বহু মানুষ পা দিতেন ওই ফাঁদে।
তার ওইসব অপকর্মকে সামাল দেয়ার জন্য তার রয়েছে রামগঞ্জে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ওই পরি বেগমের নানান প্রতারণার খবর এখন টক অব দ্য রামগঞ্জে পরিণত হয়েছে। পরীর এহেন অশালীন ও প্রতারণার কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগী শিরীন আক্তার নামে এক গৃহবধূ একাধিক নারীর পক্ষে বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহানের বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরি বেগম (প্রকাশ ফাতেমা আক্তার পরী)  রামগঞ্জ পৌরসভার নন্দনপুর গ্রামের ইম্মত আলী ভূঁইয়া বাড়ির আলমগীর হোসেনের স্ত্রী। স্বামী রাজ মিস্ত্রি আলমগীর বেশ কয়েকবার স্ত্রীর বেপরোয়া অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেও দফায় দফায় হেনস্তা হয়েছেন। এর বাইরেও পরী বেগম সম্প্রতি রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়নের বেচারাম বাড়ির শিরীন আক্তারসহ ২৩ জন দরিদ্র অসহায় নারীর কাছ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, মাতৃত্বভাতা ও নতুন ঘর করে দেয়ার নাম করে সহজ সরল মহিলাদের কাছ থেকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও ওই প্রতারক পরী বেশ কয়েকদিন আগেও রামগঞ্জ পৌরসভার সাতারপাড়া গ্রামের মিয়া বাড়ির জেসমিন আক্তার কাছ থেকে ৩ হাজার, সুফিয়া বেগমের কাছ থেকে ৮ হাজার, একই গ্রামের মিয়ার বাড়ির সোহাগী বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার, নাসরিন আক্তারের কাছ থেকে ৩০ হাজার,সুমা আক্তার ৭হাজার, আকলিমা আক্তার ৭ হাজার, বাচ্চু মিয়ার কাছ থেকে ৬ হাজার সহ পার্শ্ববর্তী আবদুল করিম বেপারী বাড়ির, জয়নাল আবেদিন বেপারী বাড়ির সহ অসংখ্য নারী-পুরুষের কাছ থেকে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, মাতৃত্বভাতা ও নতুন ঘর করে দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে পরী বেগম জানান, আমি বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। শিরিন বেগম ইএনও অফিসে যে অভিযোগ করেছে তাও পুরোপুরি সত্য নয়। শিরিন আমাকে মাত্র ২ হাজার ৫শ’ টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা সে আত্মসাৎ করে আমাকে দোষারোপ করছে।    
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, পরীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মহিলা-পুরুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। খুব শিগগিরই বাকি তদন্ত শেষ করে নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করা হবে।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, ফাতেমা আক্তার পরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের জন্য সমাজসেবা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে পরীর বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও তার প্রতারণার বিষয়ে আরো বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর