দেবলীনা দত্ত। ভারতের শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে ২২ বছরের অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি শোবিজের কাষ্টিং কাউচ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি সংবাদমাধ্যমে। তিনি বলেন, আজও মুখ বন্ধ করে থাকলে নিজেকে অপরাধী মনে হবে। ইদানীং শুনতে পাচ্ছি, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নাকি ‘ফেভারিটিজম’ আছে, ‘নেপোটিজম’ বা স্বজনপোষণ নেই। এটা মিথ্যে কথা! ডাহা মিথ্যে বলছে লোকজন। শুধু স্বজনপোষণ নয়, এই ইন্ডাস্ট্রিতে মাফিয়ার আধিপত্য কিছু কম দেখলাম না। অনেক প্রযোজক, পরিচালক ও সহশিল্পী আমাকে বাজে প্রস্তাব দিয়েছেন।
আমার শুরুর দিকের কথা বলি।
আজ থেকে ২২ বছর আগে আমার দ্বিতীয় ধারাবাহিককে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমাকে বলা হল, প্রযোজক দেখা করতে চেয়েছেন। তখন মা আমার সঙ্গে যেত, মা স্ক্রিপ্ট লিখত। কিছু ক্ষণ প্রযোজকের অফিসে অপেক্ষার পরে উনি বলে পাঠালেন, আমার সঙ্গে উনি একা কথা বলবেন। গেলাম। ওমা! গিয়ে দেখি ওর টেবিলে ঠিক ওর মুখের সামনে একটা সিসিটিভি রাখা! আজ থেকে ২২ বছর আগে! আমি বুঝলাম, যত ক্ষণ আমরা বসেছিলাম সিসিটিভি দিয়ে উনি আমাকে আর মাকে দেখছিলেন। যাই হোক, এখনকার পরিচালক বা প্রযোজকদের মতো কোনও রাখঢাক না করেই উনি আমায় জিজ্ঞেস করলেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে এসেছি আমি, কম্প্রোমাইজ’ করতে রাজি কি না! চমকাতে দেখি, উনি আমাকে আরও সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন, প্রযোজকের সঙ্গে অভিনেত্রীর বোঝাপড়া, সখ্য না থাকলে ভাল কাজ হয় না। প্রযোজককেও আলাদা সময় দিতে হবে, তবেই পারস্পরিক সমঝোতা তৈরি হবে। উনি বললেন, আমার চরিত্র, সংলাপ সব নিয়ে উনি কথা বলবেন। এমনকি, আমার জামাকাপড়ের মাপও উনি নেবেন! এটা শোনার পর আমি এক কথায় না বলে দিই ওঁর মুখের ওপর। তাতে উনি আমায় চ্যালেঞ্জ করেন, আমি নাকি ইন্ডাস্ট্রিতে এই মনোভাব নিয়ে টিকে থাকতে পারব না। শুনেছি, সব নায়িকার সঙ্গেই উনি এই ব্যবহার করতেন। ‘দর্জি প্রডিউসার’ নামে উনি বিখ্যাত ছিলেন। ছিলেন এই কারণে লিখলাম, আজ আর ওঁকে কেউ চেনে না।