লুজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাত সীমিতকরণ বিষয়ক একটি আইন ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। ঐতিহাসিক এক রায়ে আদালতের বিচারপতিরা বলেছেন, এই আইন অনুসারে, গর্ভপাত সরবরাহকারী চিকিৎসকদের স্থানীয় হাসপাতালে রোগী ভর্তি করার অনুমোদন থাকা আবশ্যক করা হয়েছে। কিন্তু এই আইন, নারীদের উপর অহেতুক বোঝা সৃষ্টি করে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস আইনটি বাতিলের রায়ে লিবারেলদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। ৫-৪ ভোটে আইনটি বাতিল করেছেন বিচারপতিরা। রায়টির সমালোচনা করেছে হোয়াইট হাউজ। এক বিবৃতিতে হোয়াইত হাউজ জানায়, এই রায়ে মা ও অনাগত শিশুর জীবনের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
লুজিয়ানার আইনটি অনুসারে, গর্ভপাত করাতে সক্ষম চিকিৎসকদের অবশ্যই তাদের সেবাদানের জায়গা থেকে ৩০ মাইলের মধ্যে অবস্থিত কোনো হাসপাতালে রোগী ভর্তি করার অনুমোদন থাকতে হবে। তবে সমালোচকদের ভাষ্য, বিতর্কিত এই আইনের কারণে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে।
রাজ্যের দাবি ছিল, আইনটি নারীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে পাস করা হয়েছে। তবে গর্ভপাত-সমর্থনকারীরা জানিয়েছেন, গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নারীদের জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার ঘটনা অবিশ্বাস্যরকমের বিরল। তাছাড়া, লুজিয়ানার অনেক হাসপাতালেরই ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতা বা অত্যন্ত রক্ষণশীল ঘরানার নীতিমালা রয়েছে। ওই হাসপাতালগুলো গর্ভপাতের অনুমোদন দেয় না। যার ফলে গর্ভপাত করাতে সক্ষম চিকিৎসকের সংখ্যা কমে যাবে।
প্রাথমিকভাবে একটি জেলা আদালত আইনটি অসাংবিধানিক হিসেবে রায় দেয়। তবে পরবর্তীতে ফিফথ সারকুট আপিলস কোর্ট আইনটির পক্ষে রায় দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আইনটির সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করে গর্ভপাতের পক্ষে কাজ করা সংস্থা সেন্টার ফর রিপ্রডাক্টিভ রাইটস।
সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ন্যান্সি নরথুপ জানান, এই রায়ে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে, তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। তিনি বলেন, এই রায়ের ফলে গর্ভপাতবিরোধীরা থেমে যাবে না। আমরাও সেদিন ফির আসবো। গর্ভপাত নিয়ে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে রাজ্য থেকে রাজ্যে প্রতিটি আইনের বিরুদ্ধে লড়ে যাবো।