যেমনটা চেয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ঠিক তেমনটাই হয়েছে। সংবিধান সংশোধনের গণভোটে তিনি শক্তিশালী সমর্থন পেয়েছেন। এর ফলে চাইলেই তিনি ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। বিরোধীরা এ ভোটের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা একে আখ্যায়িত করেছেন পুতিনের আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার নির্বাচন হিসেবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। রাশিয়ার নির্বাচন কমিশনের মতে, সদ্য অনুষ্ঠিত সংবিধান সংশোধনের পক্ষে পুতিনকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৭৭.৯ ভাগ ভোটার। বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন শতকরা ২১.৩ ভাগ।
২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ক্ষমতার মেয়াদ পূরণ করবেন। কিন্তু পরিবর্তিত সংবিধানে তাকে ৬ বছর মেয়াদী আরো দু’দফা ক্ষমতায় থাকার অনুমোদন দেয়া হবে। এরই মধ্যে সাবেক সোভিয়েত স্বৈরশাসক জোসেফ স্ট্যালিনের পর তিনিই রাশিয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী শাসক। সাত দিন ধরে চলা এই গণভোটের কোন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক ছিল না। পুতিনের শীর্ষ সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি নির্বাচনের ফলকে বড় মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন, দেশে যাতে কোনো প্রকৃত জনমতের প্রতিফলন নেই। রাশিয়ার নিরপেক্ষ নির্বাচন মনিটরিং গ্রুপ গোলোস এই নির্বাচনের সমালোচনা করেছে। তারা অভিযোগ করেছে যে, অনেকাংশে গণতন্ত্র লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিরোধীদেরকে মিডিয়ায় প্রচারণা থেকে বাধা দেয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোট আয়োজন করা হয়েছে বেআইনিভাবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ করেছে সিভিক চেম্বার। এটা হলো সরকারি একটি সংগঠন। গোলোস বলেছে, এই ভোট ইতিহাসে মানুষের সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রামণ হিসেবে স্থান পাবে।
সংবিধান সংশোধনীতে সমলিঙ্গে বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বিয়েকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হিসেবে। নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন, নির্বাচনে শতকরা ৬৫ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি সমর্থন এসেছে ক্রাইমিয়া থেকে। সেখানে ভোট দিয়েছেন শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মানুষ।
ভøাদিমির পুতিনের বয়স এখন ৬৭ বছর। তিনি বলেননি ২০২৪ সালে তার সর্বশেষ ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা। তিনি হয়তো প্রেসিডেন্ট না হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০ বছর ধরে রাশিয়ায় ক্ষমতায় আছেন। তিনি এবং তার সমর্থকরা বলেন, সংবিধানে যে নতুন সংশোধনী আনা হচ্ছে তাতে ২ শতাধিক পরিবর্তন রয়েছে। এটা জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন। সর্বশেষ ভোট গ্রহণ কেন্দ্র কালিনিনগ্রাদে গ্রিনিচ মান সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রকাশ করা হয়।