ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সকে মারধরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী শুভর পিতা আনোয়ার হোসেন ও বোন অনামিকা। বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮শে জুন ফুলবাড়ীয়ার কালিবাজাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শুভকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নং মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ডাক্তারের চিকিৎসাপত্র অনুসারে শুভকে ঐ দিনই রাত প্রায় ১১ দিকে ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পাঁপড়ি রূপা রোগী শুভকে শিরাপথে ইনজেকশন পুশ করেন। এর পরপরই রোগী শুভ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এ অবস্থায় শুভর আচরণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারকে তিনি অবহিত করেন। এদিকে ওয়ার্ডে রোগীর পাশে থাকা তার বোন অনামিকা, মা সুমি আক্তার ও বাবা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পাপড়ী রূপাকে জাপটে ধরে বেপরোয়া মারধর, টানাহেঁছড়া কাপড়- চোপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং হত্যার চেষ্টা করে।
ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সহকর্মীরাসহ অন্যান্যরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে। এদিকে কৌশলে শুভর পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। করোনাযোদ্ধা ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য সহকারীরা যেখানে জীবনবাজি রেখে দিনরাত চিকিৎসা দিয়ে আসছে, ঠিক এই মুহূর্তে হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত কোতোয়ালি পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অতি অল্প সময়ে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদুল হক বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা নং-১ (৭) ২০২০ দায়ের করে। মামলায় রোগী শুভর বোন অনামিকা, মা সুমি আক্তার ও পিতা আনোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনামিকা ও তার পিতা আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, করোনাকালীন সময়ে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। ঠিক এই সময়ে হাসপাতালের দায়িত্বরত স্টাফ নার্সকে প্রকাশ্য পিটিয়ে আহত ও নাজেহাল কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই এই দুর্ধর্ষদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।