অনলাইন

সবুজবাগে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন

স্টাফ রিপোর্টার

২০২০-০৭-০২

ঢাকার সবুজবাগের দক্ষিণগাঁওয়ের কসুমবাগ এলাকার ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীর পরিচয় ও এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুিলশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম সাদা মিয়া (৩৭)। তিনি পেশায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। ডিএমপির সবুজবাগ জোনের সিনিয়র সহকারি কমিশনার রাশেদ হাসানের নেতৃত্বে সবুজবাগ থানা পুলিশের একটি টিম বুধবার তাকে গাইবান্ধার সাঘাটার পুটিমারি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘাতক সাদা মিয়া পুলিশের কাছে এই হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আর হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারীর নাম পলি বেগম (৩৫)। তিনি পেশাদার যৌনকর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৬ই জুন সবুজবাগ থানায় খবর আসে দক্ষিণগাঁয়ের কুসুমবাগ এলাকার একটি বাসার নিচ তলার আন্ডারগ্রাউন্ডে এক নারীর মরদেহ পড়ে আছে। পরে সবুজবাগ থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে এলাকার সেলিম মিয়ার চারতলা বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডের পানির মধ্য এক নারীর মরদেহ ভাসতেছে। পুলিশ কালো কাপড় দিয়ে হাত পা বাধা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
 
এদিকে সম্পুন্ন ক্লুলেস মামলা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। মৃত এই নারীর পরিচয় ছিল অজ্ঞাত। তাই তার পরিচয় বের করার জন্য প্রযুক্তিগত সহযোগীতা নেয়া হয়। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের মাধ্যমে ডিজিটাল ও এনালগ পদ্ধতিতে মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে বায়োমেট্রিক নেগেটিভ আসে। পরে দেশের সকল থানা ও সিআইডির ক্রিমিনাল গেজেটে ওই নারীর ছবি প্রকাশ করা হয়। এতেও কোনো লাভ হয়নি।

ওদিকে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হলেও বসে থাকেনি পুলিশ। এসি রাশেদ হাসানের দক্ষতাপূর্ণ তদন্তের জন্য এই ঘটনার মুল ঘাতক সাদা মিয়াকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির সবুজবাগ জোনের সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার রাশেদ হাসান মানবজমিনকে বলেন, মামলাটি একেবারেই ক্লুলেস ছিল। অজ্ঞাতনামা আর ক্লুলেস হওয়াতে করোনা পরিস্থিতিতেও মামলাটিকে খুব সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম। গ্রেপ্তার সাদা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি, দক্ষিণগাঁওয়ের ওই চারতলা বাসার একটি কক্ষে একা থেকে সে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালাতো।

১৩ই জুন পলি বেগম তাকে এসে বলে, সে একজন যৌনকর্মী। করোনাকালে আয় ইনকাম নাই। তাই ২০০ টাকা দিলে সে বাসায় যাবে। তখন সাদা মিয়া রাজি হয়ে তাকে তার সিএনজি দিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় দক্ষিণগাঁওয়ের বাসায় নিয়ে আসে। দুজনেই শারীরিক মেলামেশার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পলি বেগম সাদা মিয়ার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু সাদা মিয়া এত টাকা দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু পলি এই টাকা না দিলে ঝামেলা করবে বলে হুমকি দেয়। সাদা মিয়া তখন পলিকে বাসায় রেখে টাকা ম্যানেইজড করার জন্য বাইরে এসে ঘুরাঘুরি করে আবার বাসায় যায়।

বাসায় যাওয়ার পর তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সাদা মিয়া উত্তেজিত হয়ে ঝামেলা এড়াতে পলির গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। মরদেহ লুকিয়ে রাখে খাটের নিচে। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে খাটের নিচ থেকে মরদেহ বের করে ওই ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে আমরা ওই ভবনের সকল বাসিন্দাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি এই হত্যাকাণ্ডে সাদা মিয়ার সম্পৃক্তা আছে। সাদা মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটার পুটিমারি। সে ওই এলাকার আব্দুল বেপারির ছেলে। সে দুটি বিয়ে করেছে। এক স্ত্রী থাকে সৌদি আরব আরেক স্ত্রী দেশেই থাকে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status