× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঘোড়াশালস্থ বাংলাদেশ জুট মিল বন্ধ ঘোষণা

বাংলারজমিন

পলাশ (নরসিংদী) সংবাদদাতা
৪ জুলাই ২০২০, শনিবার

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালস্থ বাংলাদেশ জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় মিল কর্তৃপক্ষ মিলের উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হওয়ায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুগ্ম-সচিব এবং বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের সচিব ও মিলের প্রকল্প প্রধানের স্বাক্ষরিত ৪টি নোটিশ মিলের প্রদান গেটে টানিয়ে দেয়া হয়। মিলটি বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে গেল মিলে কর্মরত প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কর্মচারী। এদিকে টানানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সমূহের বিরাজমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বিজেএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলসমূহ বন্ধ ঘোষণা পূর্বক, মিলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় অবসায়নের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইনে ২০০৬-এর ধারা ২৬ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী নোটিশের মেয়াদে ৬০ দিনের মজুরি, চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য গ্রাচ্যুইটি, পিএফ তহবিলে জমাকৃত সমুদয় অর্থ ও প্রাপ্য গ্রাচ্যুইটির উপর নির্ধারিতহারে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের সুবিধা প্রদান করা হবে শ্রমিক কর্মচারীদের।
গতকাল শুক্রবার সকালে মিল গেইটে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ’ শ্রমিক মিল বন্ধের নোটিশ পড়ে হাউমাউ করে অঝোরে কাঁদছে। মিলের শ্রমিক সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, কবির হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও রাশেদ মিয়া জানান, বর্তমান এ করোনা পরিস্থিতিতে এবং ঈদের আগে মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের হতাশ করেছে। আমরা কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
আমরা এখন একেবারে বেকার হয়ে গেলাম। মিলের সিবিএ সভাপতি ইউসুফ সর্দার ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান জানান, মিল কর্তৃপক্ষ গতকাল রাতে আমাদের না জানিয়েই মিল বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে। মিলের শ্রমিকদের ৯ সপ্তাহ মজুরি বকেয়া পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষ ঈদের আগে ৯ সপ্তাহের মজুরি ও এরিয়ার টাকাটা পরিশোধ করতো তাহলে শ্রমিকরা অন্তত ঈদে যার যার বাড়ি যেতে পারতো। মিল বন্ধের জন্য মিলে কর্মরত ৩ হাজার শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে পড়ল। শ্রমিক নেতারা আরো জানান, তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আগামীকাল বৈঠক আছে। যদি ওখান থেকে কোনো কর্মসূচির ডাক আসে তাহলে তারা কর্মসূচি পালন করবে। জানা যায়, ১৯৬২ সালে ৭৭.০২৫ একর জমির উপর মিলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে মিলটি জাতীয়করণ করা হয়। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ৫৭ বছর যাবত মিলে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
এদিকে, বাংলাদেশ জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. মতিউর রহমান মন্ডল জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ করা হয়েছে ঘোড়াশালস্থ বাংলাদেশ জুট মিলের উৎপাদন। এ মিলের মেশিনগুলো ১৯৬২ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। তাই পুরাতন মেশিনগুলো পরিবর্তন করে নতুন মেশিন স্থাপন করে এর আধুনিকায়ন করে নতুন আঙ্গিকে উৎপাদন আবার শুরু করা হবে এবং এই শ্রমিকরাই এখানে কাজ করার সুযোগ পাবে। আর শ্রমিকদের সকল পাওনা  টাকার  মধ্যে ৫০ ভাগ এককালীন নগদ ও অবশিষ্ট ৫০ ভাগ শ্রমিকদের ভবিষৎ জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনমাস অন্তর মুনাফা ভিক্তিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। তবে কবে নাগাদ পরিশোধ করা হবে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ ব্যাপারে বিজেএমসি’র কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন। এদিকে, মিলে আর্মস পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও পলাশ থানার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর