× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ধরলায় পানি বৃদ্ধি /কুড়িগ্রামে অপরিবর্তিত বন্যা পরিস্থিতি

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে
৪ জুলাই ২০২০, শনিবার

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি ধীরে ধীরে কমলেও ধরলা নদীর পানি আবারো বাড়তে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার এবং দুধকুমর নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম নদ-নদীর পানি প্রবাহের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ৮দিন ধরে বানের পানিতে ডুবে আছে। জেলা প্রশাসন সূত্র মতে, জেলার ৫৬টি ইউনিয়নের ৫৭৯টি গ্রাম বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। প্রায় ১৭ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে ৫ শতাধিক পরিবার। আর বে-সরকারি হিসাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখের উপর।
এছাড়া গত দু’দিন ধরে ভারি বর্ষণের কারণে সড়ক ও বাঁধের উপর আশ্রিত মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট আরো প্রকট হয়েছে। দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। বেড়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বন্যা দুর্গতরা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিয়ে পড়েছে চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে নারী, শিশু-কিশোরী ও বৃদ্ধদের অবস্থা খুবই নাজুক। উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন ও কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, চাহিদামতো ত্রাণ বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনো সব বন্যার্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, সরবারে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক পর্যাক্রমে তা দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩০২ মে.টন চাল ও ৩৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে।  
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, জেলায় ৯ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বোর ধানের বীজতলা ৫৩২ হেক্টর, আউশ ধান এক হাজার ৯৫৫ হেক্টর, শাক সবজি ৮৬০ হেক্টর, তিল ৩০২ হেক্টর, কাউন ২০ হেক্টর, চিনা ১৪০ হেক্টর, মরিচ ১৪০ হেক্টর এবং পাট ক্ষেত ৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর। এসব ক্ষতিগস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে জানান। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, বন্যার্ত মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এর বাইরেও কোনো খারাপ খবর পেলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নেবো। সে রকম প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়হান আলী জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ কিট ২৫ হাজার সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন করে বন্যাদুর্গদের সহায়তায় স্থাপন করা হয়েছে ১২টি টিউবওয়েল ১২টি ল্যাট্রিন। মেরামত করে দেয়া হয়েছে ৪৩৫টি টিউবওয়েল। এছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ৬ শতাধিক টিউবওয়েলের গোড়া (প্ল্যাটফর্ম) উঁচু করে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বন্যার্তদের মাঝে প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ জন্য দু’টি বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্টের ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ঘুরে ঘুরে পানি সরবরাহ করছে। প্রতিটি বিশুদ্ধ পানির প্লান্ট থেকে প্রতিঘণ্টায় ২ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর