২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে ফিক্সিং অভিযোগের উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় শুক্রবার তদন্তের ইতি টেনেছে শ্রীলঙ্কা পুলিশের ইন্ডিপেনডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। এরপরই আইসিসিও জানিয়ে দেয়, ফাইনাল নিয়ে কোন সংশয় নেই। আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল বলেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। আইসিসি ইন্টিগ্রিটি ইউনিট ফাইনাল নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ফাইনাল নিয়ে তদন্ত করা যায় এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে পেশ করা হয়নি। অভিযোগকারী শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছ থেকেও কোন চিঠি পাওয়া যায়নি। যদি কারও কাছে এই ম্যাচ বা অন্য কোনও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিষয় সম্পর্কিত কোন প্রমাণ থাকে তবে আমরা তাদেরকে আইসিসি ইন্টিগ্রিটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করব।’
৯ বছর পর হঠাৎই গত মাসের শুরুতে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী মহিন্দানন্দ আলুথগামাগে দাবি করেন, ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি পাতানো ছিল। ভারতের কাছে শিরোপা বিক্রি করেছিল শ্রীলঙ্কা এমন অভিযোগও করেন তিনি। লঙ্কান সাবেক মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় ক্রিকেট বিশ্বে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটও নড়েচড়ে বসে। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে আসলেই এমন হয়েছে কিনা, সেটা জানতে তদন্ত শুরু করে লঙ্কান পুলিশের ইন্ডিপেনডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। ম্যারাথন জেরা করা হয় সেই সময়কার প্রধান নির্বাচক প্রধান অরবিন্দ ডি’সিলভাকে।
প্রায় ছয় ঘণ্টা জেরা করা হয় তাকে। তৎকালীন অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারাকে দশ ঘণ্টা জেরা করা হয় বৃহস্পতিবার। ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও মাহেলা জয়াবর্ধনেও বাদ যাননি।
তদন্ত শেষে ম্যাচ গড়াপেটার উপযুক্ত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান বিশেষ তদন্ত কমিটির ইনচার্জ জাগাথ ফোনসেকা, ‘ক্রিকেটারদের ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট। এ বিষয়ে আর তদন্ত এগোনো হবে না।’ ভারতের কাছে হেরে যাওয়া ওই ফাইনালের একাদশে আগের ম্যাচের একাদশ থেকে চারটি পরিবর্তন এনেছিল শ্রীলঙ্কা। এতগুলি পরিবর্তন নিয়ে তখন বিস্ময় ছিল অনেকেরই, প্রশ্ন ওঠে এখনও। বিশেষত রঙ্গনা হেরাথ ও অজন্তা মেন্ডিসকে না খেলিয়ে বিশ্বকাপে একটা ম্যাচও না খেলা সুরাজ রনদ্বীপকে কেন একাদশে রাখা হয় সেটা নিয়ে। সেই পরিবর্তনের ব্যাখ্যা চাওয়া হয় সেই সময়ের অধিনায়ক সাঙ্গাকারা ও প্রধান নির্বাচকের কাছ থেকে। জাগাথ ফোনসেকা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন ফাইনালের চার পরিবর্তন নিয়ে। তাদের যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট।’
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে ৬ উইকেটে ভারতের কাছে হারে শ্রীলঙ্কা। মহিন্দানন্দ আলুথগামাগের ‘বিশ্বকাপ বিক্রির’ অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার আসছিলেন সে দলের ক্রিকেটাররা।