পাবনায় একদিনে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছে আরো ১৩৬ জন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বন্ধুসহ মারা গেছেন তিনজন। জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৮৪ জনে। এবং করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেন মোট ১১ জন। নতুন মৃতরা জেলা সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার আইয়ুব আলী (৫৫), শিবরামপুর মহল্লার মো. সালাউদ্দিন (৫৬)। তারা দুজন ব্যবসায়ী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। এবং অপর জন শিবরামপুর মহল্লার আবুল হাশেম। তাদের মধ্যে আইয়ুব আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, মো. সালাউদ্দিন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং আবুল হাশেম বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদের সবারই করোনা পজেটিভ শনাক্ত ছিল।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মো. সালাউদ্দিন বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ই জুন তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে করোনা ‘পজেটিভ’ শনাক্ত হন।
পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে রোববার দুপুরে তিনি মারা যান। আইয়ুব আলী জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে ২৬শে জুন তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকালে তিনি মারা যান এবং আবুল হাশেম জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যায় মারা যান।
আইয়ুব আলীর শ্যালক ফয়সাল ইসলাম জানান, মৃত সালাউদ্দিন ও আইয়ুব আলী দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তারা দুজনই ব্যবসা করতেন। তবে বেশ কিছুদিন তাদের দেখা হয়নি। দু’জন পৃথকভাবেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় কোনো পিসিআর ল্যাব না থাকায় ঢাকা ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পিসিআর ল্যাবে জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ল্যাবে নমুনার চাপ বেশি থাকায় পরীক্ষার ফলাফল পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৩০টি নমুনা দিয়ে ৬ হাজার ৩৪০টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এ থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮৪ জনে। একটি সূত্র জানায়, গত ৭ দিন পাবনায় কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয় নি। নমুনা জটে নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করার বক্স না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। সর্বশেষ সোমবার দুপুরে প্রাপ্ত ফলাফলে জেলার নতুন করে করোনা ‘পজেটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন ১৩৬ জন। এখন পর্যন্ত জেলা সদরে ২৯৯ জন, ঈশ্বরদীতে ৯৮ জন, সুজানগরে ৭৪ জন, আটঘরিয়ায় ২৩ জন, চাটমোহরে ১১ জন, ভাঙ্গুড়ায় ২৪ জন, ফরিদপুরে ৮ জন, সাঁথিয়ায় ৩৭ জন ও বেড়ায় ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেন।