× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্লে-ব্যাক সম্রাটের বিদায়

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৭ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার

চলে গেলেন প্লে-ব্যাকের মুকুটহীন সম্রাটখ্যাত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। অসংখ্য ভক্তদের কাঁদিয়ে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে  রাজশাহীতে বোনের নিজস্ব ক্লিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন। কিংবদন্তি এই শিল্পীর চলে যাওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গন তথা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে ৯ মাস পর গত ১১ই জুন দেশে ফেরেন আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত কিংবদন্তি এই গায়ক। ক্যানসারমুক্ত হয়ে দেশে ফেরার কথা থাকলেও তা হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন আর কিছুই করার নেই।
বিষয়টি জানার পর এন্ড্রু কিশোর পরের দিনই বিশেষ ফ্লাইটে চলে আসেন দেশে। জীবনের শেষ ক’দিন নিজের দেশেই কাটাতে চেয়েছিলেন তিনি। দেশে এসে  মিরপুরের বাসায় ছিলেন। পরবর্তীতে চলে যান নিজের বাড়ি রাজশাহীতে। গত বছরের ৯ই সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন এই শিল্পী। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১৮ই সেপ্টেম্বর তার শরীরে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তার চিকিৎসা শুরু হয়।  কয়েক মাস সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসা চলে।

এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসায় সহায়তার হাত বাড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার খরচ জোগাতে এন্ড্রু কিশোর বিক্রি করে দেন রাজশাহী শহরে তার কেনা ফ্ল্যাটটি। শিল্পীর পরিবারের পাশাপাশি সংগীতশিল্পী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এবং প্রবাসীরা এগিয়ে এসেছিলেন। এন্ড্রু কিশোরের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তারা দু’জনেই অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা সিডনিতে গ্রাফিকস ডিজাইন ও ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক মেলবোর্নে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়াশোনা করছেন। নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়েছেন। তাকে বলা হতো প্লেব্যাকের মুকুটহীন সম্রাট।

বাংলা গানের এই কিংবদন্তি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের জাদুতে সংগীতপ্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছিলেন।  প্রাথমিকভাবে আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে সংগীতের পাঠ শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, কিশোর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধকসহ প্রায় সব ধারার গানে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত হন। তার চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খান সুরারোপিত ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে। তার রেকর্ডকৃত দ্বিতীয় গান বাদল রহমান পরিচালিত এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী চলচ্চিত্রের ‘ধুম ধারাক্কা’। তবে ১৯৭৯ সালে এ জে মিন্টু পরিচালিত ‘প্রতিজ্ঞা’ চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ‘এক চোর যায় চলে’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

 এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি। একের পর এক জনপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়ে গেছেন চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রের বাইরেও অডিওতেও তিনি উপহার দিয়েছেন অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদান রাখার জন্য তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুষ’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘সবাইতো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘তুমি আমার জীবন’,  ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘এখানে দুজনে নিরজনে’, ‘ও সাথীরে’সহ অসংখ্য গান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর