নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় মহামারী করোনা সংক্রমন জনিত কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ভালো নেই অর্ধ শতাধিকের উপরে বেসরকারী কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা। অনেকেই আর্থিক অনটনের কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ কেউ পেশা পাল্টে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে। গত ১৮ মার্চ থেকে সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে বন্ধ রয়েছে পলাশের ৬৪ টি কিন্ডারগার্টেন। এতে সাত শতাধিক স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতি শিক্ষকতা করেন। বিদ্যালয়ের সামান্য বেতন আর প্রাইভেট টিউশনি ছিল তাদের ভরসা। এসব স্কুলের কর্মরত শিক্ষকরা বর্তমানে ৪ মাস ধরে পুরোপুরি কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আয় উপার্জন বন্ধ থাকায় তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
পলাশ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৪টি ইউনিয়নে এসব কিন্ডারগার্টেন গুলো বেশীর ভাগই ভাড়া বাসায়। যারা স্কুলগুলো পরিচালনা করেন তারাও চার মাস যাবৎ বাড়ী ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। ফলে উপজেলার এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুল টিকে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।অনেকেই স্কুলের ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের পূবালী এলাকার আর্লিবার্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ মুস্তফা ইসলাহী জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন বেতন পাচ্ছি না। ফলে শিক্ষকদেরও বেতন দেওয়া হচ্ছে না। আমার স্কুলে ৩ জন কর্মচারী ও ১২ জন শিক্ষক শিক্ষকতা করে আসছে। স্কুল বন্ধ থাকায় এখন সবাই কর্মহীন। তাছাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সব শিক্ষকরাই মধ্যবিত্ত পরিবারের তাই তাদের অভাব অনটনের কথা মুখ ফুটে কাউকে বলতেও পারছে না। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে সরকারী প্রনোদনা প্রদান করছেন। কিন্তু কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা এ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকগণের প্রনোদনা ও আর্থিক সহযোগিতা জরুরী হয়ে পড়ছে।
আরমান মিয়া নামে এক শিক্ষক বলেন, প্রায় চার মাস যাবৎ বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বেতন পাচ্ছি না। আমরা বেচে আছি না মরে গেছি কর্তৃপক্ষও খোঁজ রাখেন না। গত চার মাস ধরে বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল দিতে পারছিনা। মাঝে মাঝে আত্মীয়স্বজনরা সহযোগিতা করেন। এভাবে বাচা যায়না।
পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের হাজী আসরাফ আলী ল্যাবরেটরী কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ ও পলাশ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কারিউল্লাহ সরকার জানান,কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি টিউশনির ওপর নির্ভরশীল।চার মাস ধরে এসব শিক্ষকের কোনো আয় উপার্জন না থাকায় তারা চরম অর্থসংকটে জীবনযাপন করছেন।এসব শিক্ষক করোনাকালে সরকারীÑবেসরকারী কোন খাত থেকেই সহায়তা পাননি।
এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি রুমানা ইয়াসমিন জানান,সরকারী ভাবে এ সকল শিক্ষকদের প্রণোদনার কোন নির্দেশনা এখনো পাইনি।তবে শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমি শীঘ্রই বসে তাদের এ সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করবো।