বিজেএমসি নিয়ন্ত্রিত পাটকল বন্ধের পর বিদ্যালয়য়ে কর্মরত অস্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা রয়েছেন চরম হতাশা ও আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায়। বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ বা এমপিও ভুক্তির সাথে তাদের যুক্ত রাখার জোর দাবী জানিয়েছেন তারা।
খুলনার রাস্ট্রায়ত্ত পাটকলের বিদ্যায়লগুলোতে ১৫ থেকে ২০ বছর কাজ করছেন প্রায় অর্ধ শত শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারী। এত বছর কাজ করার পরও তাদের স্থায়ী করেনি মিল ও বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ। এ যাবৎকাল তাদের দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠ্যকার্যক্রমসহ সরকারি ও বিজেএমসির সকল নির্দেশনা পালন করে আসছে মানুষ গড়ার কারিগররা। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষা জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে তাল মিলাতে আধুনিক পাঠদানের দক্ষতা অর্জনে বিএড সহ মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আধুনিক পাঠদানে তারা প্রযুক্তির সাথে তালমেলাতে সকল প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। মিলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হবার পর থেকে তারা চরম হতাশা ও চিন্তাগ্রস্থ রয়েছেন।
মিলের উৎপাদন বন্ধের সময় সরকার ঘোষনা দিয়েছেন মিলের পরিচালিত এ বিদ্যালয়গুলি জাতীয় অথবা এমপিও ভুক্ত করা হবে। প্রজ্ঞাপনে সেটি উল্লেখ রয়েছে। তারপরও তারা শঙ্কায় রয়েছে কারন তাদের কাউকে বদলী শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে কাজ করাচ্ছে। কাউকে দৈনিক ভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছে। তারা যেন কেউ জাতীয় করন অথবা এমপিও ভুক্তিকরন থেকে বাদ না যায়। সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে মিল কতৃপক্ষ ও বিজেএমসির প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
প্লাটিনাম জুটমিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিরিনা খানম জানান, ২০০০ সালের সেপ্টেন্বর মাস থেকে তিনি শিক্ষকতার কাজ করেন। অদ্যবধি তাকে স্থায়ী করা হয়নি। জীবনের ২০টি বছর পারকরেছেন বিদ্যায়ের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে।
স্টার জুটমিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিলা মমতাজ জানান, তিনি গত প্রায় ১০ বছর পাঠদান কার্যক্রম সহ মিল কতৃপক্ষ, বিজেএমমি, সরকারী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় নির্বচনে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। পাঠদানের পাশাপাশি এসব শিক্ষকরা সরকারি ও বিজেএমসির নির্দেশনায় সকল জাতীয় কার্যক্রমের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এ বিদ্যালয়ে কাজ করে তারা তাদের চাকুরীর সরকারি বয়স পার করেছেন। এ মিলগুলোকে সরকারী অথবা এমপিও ভুক্ত যাই করুক তাদের সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত না করার দাবি এসব শিক্ষক শিক্ষিকাদের।
এ ব্যাপারে স্টার জুটমিলের প্রকল্প প্রধান আবুল কালাম আজাদ জানান, বিজেএমসি যে তালিকা চেয়েছে। সে তালিকায় তাদের নাম পাঠিয়েছেন । তবে কয়েকটি মিল কতৃপক্ষ এ সব শিক্ষকদের ছাড়াই তালিকা পাঠিয়েছে বিজেএমসিতে। খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের প্লাটিনাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সামাবেশ করেছে। পাটকলকে নতুন আঙ্গিকে চালু সহ পাটকলের বিদ্যালয় গুলোকে জাতীয় অথবা এমপিও ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা সেই সাথে তাদের দীর্ঘদিনের কর্মক্ষেত্রে তারা অর্ন্তভুক্ত থাকতে পারেন তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জনিয়েছেন। তারা আরো জানান, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দিয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার মা উপাধি পেয়েছেন। তাই এ মানবতার মায়ের কাছে এ শিক্ষক শিক্ষিকাদের দাবি এমপিও ভুক্ত আর জাতীয় করণ হোক তাদের অন্তর্ভুক্ত রেখে স্থায়ী করার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।