× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার আহ্বান এইচআরডব্লিউ’র

দেশ বিদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
১১ জুলাই ২০২০, শনিবার

ভাসানচরে থাকা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংগঠনটি বলেছে, ৩৩ শিশুসহ চরটিতে থাকা ৩০০’র বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে নেয়া উচিত। সংগঠনটি আরো বলেছে, প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার এখনো ওই রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা সেবা দিতে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের অনুমোদন দেয়নি। কয়েক সপ্তাহ সমুদ্রে ভাসমান থাকার পর তাদের উদ্ধার করে ভাসানচরে পাঠানো হয়।
এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে, কক্সবাজারের শিবিরগুলোয় করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রুখতেই উদ্ধার করা শরণার্থীদের সাময়িকভাবে ভাসানচরে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তবে, দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও তাদের সেখান থেকে ফেরত আনা হয়নি। চলমান বর্ষা মৌসুমে তারা চরটিতে বন্যা ও ঝড়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুঁতেরা ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা তাদের সেখান থেকে নিরাপদে কক্সবাজারে সরিয়ে আনার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড এডামস বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ করোনা মহামারিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে শরণার্থীদের উন্মন্থন বর্ষার সমুদ্রের মাঝখানে অল্প একটু জমিতে বন্দি করে রেখেছে।
যখন তাদের পরিবারগুলো তাদের ফেরত পেতে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রার্থনা করছে। তিনি আরো বলেন, শরণার্থীদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে ত্রাণকর্মীদের অনুমোদন ব্যাখ্যাতীত কারণে বিলম্বিত করছে সরকার।
ভাসানচরে রাখা রোহিঙ্গাদের পরিবারগুলো এইচআরডব্লিউ’কে বলেছে, তাদের আত্মীয়-স্বজনদের চলাফেরার স্বাধীনতা না দিয়ে বা খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা না দিয়ে চরটিতে আটকে রাখা হয়েছে। এমনকি খাবার পানির তীব্র সংকটে ভুগছে তারা। কিছু শরণার্থী অভিযোগ করেছেন, ভাসানচরে তাদের মারধর ও অসদাচরণ করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজারের কিছু শরণার্থী জানান, শিবিরের নেতারা তাদের বলেছেন যে, তারা যদি চরে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখতে চায় তাহলে তাদেরও সেখানে গিয়ে থাকতে হবে। একজন শরণার্থী এইচআরডব্লিউ’কে জানিয়েছেন, তার শিবিরের এক নেতা তার ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে গেছে। ওই নেতা তাকে বলেছে, তার ছেলে ভাসানচরে থাকে, এজন্য ওইসব তথ্য প্রয়োজন। ওই শরণার্থী বলেন, তাদের একজন আমার ঘরে এসে বললো আমাকে আমার ছেলের কাছে যেতে হতে পারে।
কিন্তু ওই শরণার্থী ভাসানচরে যাওয়া নিয়ে গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, শেষবার ফোনে কথা বলার সময় আমার ছেলে সেখানকার সবকিছু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। আমাদের যদি সেখানে যেতে জোর করা হয় তাহলে এই কুটির ছেলে পালানো ছাড়া আমার কাছে আর উপায় থাকবে না। আমার ছেলে আমায় সেখানে যাওয়ার প্রস্তাবে কোনোমতেই রাজি না হতে বলেছে। উল্লেখ্য, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বারবার ভাসানচরের বাসযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের জবাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বারবার বলেছে, কোনো শরণার্থীকে জোর করে ভাসানচরে পাঠানো হবে না। তারা আরো জানিয়েছিল,  জাতিসংঘের অনুমোদন পেলে তবেই শরণার্থীদের সেখানে পাঠানো হবে। তবে সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার। ভাসানচরে আটক রোহিঙ্গাদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়নি তারা। শরণার্থীদের সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও যাচাইকরণ সেবা দিতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে সেখানে যাওয়ার অনুমোদনও দেয়া হয়নি। এমনকি জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে চরটির বসবাসযোগ্যতা যাচাইয়ে স্বচ্ছ নীরিক্ষার অনুমোদনও দেওয়া হয়নি।
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, ভাসানচরে আরো রোহিঙ্গা পাঠানো হলে, তা শরণার্থীদের নিয়ে সরকারের অবস্থান বিপজ্জনকভাবে পাল্টে দেবে। গত ফেব্রুয়ারিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, আমরা কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি, তবে তাদের সেখানে পাঠানোর ব্যাপারে আমরা আগ্রহী নই।
 এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এডামস বলেন, বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও ভালো থাকার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তাহলে সেখানে সুরক্ষা, মৌলিক সেবা দিতে ও কারিগরি মূল্যায়ন করতে জাতিসংঘকে অবাধ প্রবেশাধিকার দেয়া উচিত কর্তৃপক্ষের।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর